গায়েবি মামলা: বিচারিক তদন্ত কমিশন চেয়ে নোটিশ
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধীদের নিপীড়নের জন্য গায়েবি মামলা দেওয়ার সঙ্গে জড়িত সাংবিধানিক পদধারীদের চিহ্নিত ও আইনের আওতায় আনাসহ ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র্যাবের ডিজি বরাবর এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার।
নোটিশে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই পুলিশ, র্যাব ও আইন আদালতকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের গায়েবি মামলায় জড়িত করতো: গ্রেপ্তার, কারাবন্দি, রিমান্ড ও রিমান্ড বাণিজ্যের শিকারে পরিণত করেছে।
নোটশে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান থেকে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের বাধ্যবাধকতার বিধান সংবিধান থেকে বিলুপ্ত করে ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন করে, যার মধ্যে ১৫৩টি আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীকে নমিনেশন পেপার জমা দিতে দেওয়া হয় নাই, যারাই প্রার্থী হতে চেয়েছেন তাদের ও সমর্থকদের গায়েবি মামলা দিয়ে বাড়িঘর ছাড়া করেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আইন আদালতকে অপব্যবহার করে ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচনেও ‘গায়েবি মামলা’ পদ্ধতি অনুসরণ করে একতরফা নির্বাচন করেছে। বিভিন্ন দল থেকে যারা ওইসব নির্বাচন করেছে তাদের নির্বাচনী মাঠে দাঁড়াতেই দেয় নাই। হাইকোর্ট গায়েবি মামলায় আগাম জামিন দিলেও নিম্ন আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণসহ কোনো কোনো ক্ষেত্রে রিমান্ড মঞ্জুর করত: পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে।
নোটিশে শেখ হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলী ও বিরোধী দলকে দমন নিপীড়নের উদ্দেশ্যে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের মাধ্যমে গায়েবি মোকদ্দমা রুজু করে হয়রানি, গ্রেপ্তারসহ রিমান্ড, রিমান্ড বাণিজ্য ও ভুয়া চার্জশিট দেওয়ার মাধ্যমে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশকে নির্যাতন, হয়রানি এবং কারারুদ্ধ রাখার নিদের্শদাতা, পরিকল্পনাকারী, রচিয়তা এবং দায়ী সরকারি কর্মচারী/কর্মকর্তাসহ পতিত সরকারের সংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক পদধারীদের চিহ্নিত ও আইনের আওতায় আনাসহ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করার আবেদন করা হয়।
জনগণের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার সম্মুন্নত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে প্রতিকারের জন্য প্রচলিত আইনে উচ্চ আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করা হবে নোটিশে উল্লেখ করেন আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার।