গুজব মোকাবেলায় গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে চট্টগ্রামে সিজিএস’র কর্মশালা
বিভ্রান্তিমূলক তথ্য, মিথ্যা খবর ও গুজব প্রতিরোধে ‘কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রামে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে নগরের একটি হোটেলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্ট্যাডিজ (সিজিএস) কর্মশালাটি আয়োজন করে।
কর্মশালায় চট্টগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় এবং স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিক, ফ্যাক্ট-চেকার ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন, সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান এবং কর্মশালাটি পরিচালনা করেন এজেন্সি ফ্রান্স প্রেস (এএফপি)’র ফ্যাক্ট চেক এডিটর কদরুদ্দীন শিশির।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জিল্লুর রহমান বলেন, সম্প্রতি দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনে আমরা একটি ঘটনা লক্ষ্য করেছি। নির্বাচন চলাকালীন বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল গুলোতে দেখানো হলো এবং নির্বাচনের দিন এক পর্যায়ে পর্যবেক্ষক দলটি প্রেস ব্রিফিংও করলো। আমাদের সংবাদ মাধ্যমে দেখানো হলো যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং কানাডা সহ বিভিন্ন দেশের পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক বিবৃতি দিচ্ছেন। ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ালো যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডা দূতাবাস থেকে ঘোষণা দিতে হয়েছে যে উক্ত ব্যক্তিবর্গ ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে, অর্থাৎ পর্যটক হিসেবে বাংলাদেশে এসেছেন এবং উক্ত তিন দেশের সরকার এই নির্বাচনে কোন পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে পাঠাননি। কিন্তু, এই যে জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমগুলো নির্বাচনের সময় দিনব্যাপি এসব গুজব প্রচার করলো, এই ঘটনাগুলোই বর্তমানে সাংবাদিকদের পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
তিনি আরও বলেন, সংবাদ প্রকাশের পূর্বে প্রচারিত তথ্যের সত্যতা যাচাই বা ফ্যাক্ট চেকিং করা জরুরি। এ কর্মশালাটি সাংবাদিকদেরকে যথাযথ পেশাদারিত্বের সাথে সংবাদ প্রচারে সহায়তা করবে।
দেশে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য, মিথ্যা সংবাদ ও গুজব প্রতিরোধে সিজিএস’র ধারাবাহিক কার্যক্রমের এটি সর্বশেষ পর্ব। প্রথম পর্বে সিজিএস সারা দেশের ৫টি বিভাগীয় শহরে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ৭টি সংলাপ আয়োজন করে। এ পর্যায়ে সংগঠনটি একই বিভাগীয় শহরগুলোতে ভুল তথ্য প্রতিরোধে কর্মশালার আয়োজন করেছে।
এদিকে কর্মশালায় কদরুদ্দীন শিশির সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সত্যতা নির্ণয় বা ফ্যাক্ট চেকিং এর বিষয়ে বিভিন্ন পদ্ধতি, উপায় ও সতর্কতার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। এছাড়াও, বাংলাদেশে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ভুল সোর্স, একটিমাত্র সোর্সকে ভরসা করা, সংবাদের ভুল ব্যাখ্যা বা অনুবাদ, প্ররোচণামূলক ভুল সংবাদ ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, মনোযোগ আকর্ষণকারী ঘটনার নিউজের সত্যতা নিয়ে সতর্ক থাকার গুরুত্ব, অনলাইন সাংবাদিক ও মূলধারার সাংবাদিকদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব, ফ্যাক্টচেকিং এর বর্তমান অবস্থা, বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের তুলনামূলক অবস্থান, অপ/ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় করণীয়, ইত্যাদি বিষয়সমূহ আলোচনায় উঠে আসে।