দেশজুড়ে

গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা: সালিশে থুতু চাটানোর পর যুবককে জুতাপেটা

গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ঘরোয়া সালিশে ধর্ষণচেষ্টাকারী যুবককে গৃহবধূর থুতু মাটিতে ফেলে চাটানো ও ২১ বার জুতাপেটা করা হয়েছে।

সোমবার রাত ১০টার দিকে ধামরাইর বালিয়া ইউনিয়নের এক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সোমবার বেলা ১১টার দিকে হালকা বৃষ্টির সময় এক গৃহবধূ তাঁর ৬ বছরের ছেলেকে খুঁজতে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশী নদীর পাড়ে যান। এ সময় হানিফ আলীর ছেলে টমটমচালক স্বপন হোসেন (৩০) গৃহবধূকে একা পেয়ে কাপড় দিয়ে মুখ বেঁধে পাশের লেবু বাগানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে তাঁকে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টাও করা হয়। এ সময় গৃহবধূ দৌড়ে পালিয়ে বাড়ি গিয়ে তাঁর স্বামীকে বিষয়টি জানান। পরে বিষয়টি স্থানীয় মাতবরদের জানানো হলে সোমবার রাত ১০টার দিকে গ্রামের আশরাফ আলী মাতবর বাড়িতে ঘরোয়া সালিশের আয়োজন করা হয়। এ সালিশে উপস্থিত ছিলেন স্বপন হোসেন, তাঁর বাবা হানিফ আলী, ধর্ষণচেষ্টার শিকার গৃহবধূ, তাঁর স্বামী, স্থানীয় মাতবর হুকুম আলী, আশরাফ আলী, বাছেদ আলী, মুক্তার আলী ও জুলহাস উদ্দিন।

সালিশে মাতবররা ভুক্তভোগীর বক্তব্য শোনার পর ধর্ষণচেষ্টাকারীকে থুতু চাটানো ও জুতাপেটা করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর প্রথমে ভুক্তভোগী গৃহবধূর থুতু মাটিতে ফেলানোর পর তা ধর্ষণচেষ্টাকারী স্বপনকে দিয়ে চাটানো হয়। এরপর তাকে ২১ বার জুতাপেটা ও পায়ের তলায় লাঠি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করেন মাতবর হুকুম আলী।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, তারা গরিব মানুষ। টাকাপয়সা নেই, তাই আইনের আশ্রয় নিতে পারেননি। সালিশে লম্পট স্বপনের সাজা কম হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তিনি স্বপনের কঠিন শাস্তি চান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাতবর হুকুম আলী সাংবাদিকদের বলেন, স্বপন গৃহবধূর হাত ধরে টানাটানি করেছেন, তাই ঘরোয়া সালিশের মাধ্যমে তাকে মারধর, থুতু চাটানো ও জুতাপেটা করে সমাধান করা হয়েছে।

সালিশে জুতাপেটা ও থুতু চাটানোর কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত স্বপন। তবে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জবাব দেননি।

ধামরাই থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা সালিশ-অযোগ্য অপরাধ। ধর্ষণচেষ্টাকারীও সালিশকারীদের বিরুদ্ধে শিগগির আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *