গ্যাসের মিটারের অপেক্ষা ফুরোচ্ছে ১ লাখ গ্রাহকের
অপেক্ষার প্রহর ফুরোচ্ছে গ্যাসের প্রিপেইড মিটারের অপেক্ষায় থাকা ১ লাখ গ্রাহকের।আগামী ২৯ নভেম্বর প্রিপেইড মিটার জাহাজে তুলছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যা দেশে পৌঁছার সম্ভাবনা রয়েছে।এরপর বন্দর ও কাস্টমসের সব প্রক্রিয়া শেষে বন্দর থেকে খালাসের পর ডিসেম্বরের শেষদিকে বা নতুন বছরের শুরুতে গ্রাহক পর্যায়ে মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি কোম্পানির আনা মিটার পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য কেজিডিসিএলের ফৌজদারহাটের কার্যালয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
কেজিডিসিএল সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী আগামী ২৫ নভেম্বর ১ লাখ প্রিপেইড মিটার নিয়ে আসছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টয়োকিকি। বাড়তি আরও ৫ হাজার মিটার আনা হচ্ছে একইসঙ্গে, যাতে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত মিটার বদল করা যায়।
এছাড়া প্রিপেইড মিটারের জন্য এ পর্যন্ত ৯১ হাজার গ্রাহকের আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে হালিশহর এলাকায় গ্রাহকের সংখ্যা বেশি। কোন এলাকায় কখন কিভাবে কাজ করবে তার কর্মপরিকল্পনা তৈরির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। পরে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত হবে কখন কোন এলাকার গ্রাহকেরা প্রিপেইড মিটার পাবেন।
২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ লাখ সংস্থাটির এক লাখ গ্রাহককে আনা হচ্ছে প্রিপেইড মিটারের আওতায়। ‘ইন্সটলেশন অফ প্রিপেইড গ্যাস মিটার ফর কেজিডিসিএল পার্ট-৩’ নামের নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে নগরের সদরঘাট, বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, ইপিজেড, বাকলিয়া, কোতয়ালি, ডবলমুরিং, বন্দর, পতেঙ্গা, আকবরশাহ এবং জেলার হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী এবং চন্দনাইশ উপজেলার কেজিডিসিএল গ্রাহকরা প্রিপেইড মিটার পাবেন।
বর্তমানে কর্ণফুলী গ্যাসের মোট ৬ লাখ আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ন্যাচরাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রথম দফায় ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনে কেজিডিসিএল। জাইকার অর্থায়নে ২০১৫ সালে হাতে নেওয়া ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যাস সাশ্রয়সহ গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসায় প্রিপেইড মিটার স্থাপনে নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ। তবে নানা জটিলতার কারণে পিছিয়ে যায় এ প্রকল্পের কাজ। এরপর প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। পাশাপাশি সময় বেড়ে হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. নাহিদ আলম বলেন, আগামী ২৯ নভেম্বর প্রিপেইড মিটার জাহাজে তোলার কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বা তার কিছু সময় পরে সেগুলো বন্দর থেকে খালাস হবে। ফৌজদারহাট কার্যালয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তা মিটার স্থাপনের কাজ শুরু করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আমরা আরও বাড়তি মিটার আমদানি করছি। কোন মিটার নষ্ট হয়ে গেলে বাড়তি মিটার থেকে গ্রাহককে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, টয়োকিকি থেকে আমদানিকৃত মিটার আগের মিটার থেকে আরও উন্নত। দশ বছরের গ্যারান্টি দিচ্ছে জাপানি এই প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ফলে ঠিকাদার কাজ শেষ করে চলে যাওয়ার পর প্রিপেইড মিটারে কোন জটিলতা দেখা দিলে গ্রাহকদের সাপোর্ট দিতে কেজিডিসিএল প্রস্তুত থাকবে।
এদিকে গ্রাহকদের মিটার রিচার্জ জন্য বিভিন্ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠান সাথে চুক্তি বদ্ধে চেষ্টা করছে। মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের মতোই গ্রাহকরা মিটারে প্রয়োজনীয় গ্যাসের টাকা রিচার্জ করতে পারবে বলে জানা গেছে।