ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে গোলযোগ, এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে সতর্কাবস্থা
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গত কয়েকদিন ধরেই ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে সৃষ্ট গোলাগুলির কারণে বাংলাদেশের সীমান্তও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ওপার থেকে গুলি, আরপিজি, মর্টারশেল এসে পড়ছে দেশের অভ্যন্তরে।
বোমার বিকট আওয়াজ ও অস্ত্রের বিশেষাংশ বাংলাদেশে এসে পড়ায় সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর জনগণ ভীত, উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্ত এলাকার শিক্ষা কার্যক্রম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এসএসসি পরীক্ষা নিয়েও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।
জানা গেছে, নিরাপত্তার কারণে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু ও ঘুমধুম ইউনিয়নের পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
বন্ধ বিদ্যালয়গুলো হলো- ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইশফাঁড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কুল তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তা ছাড়া মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে সীমান্ত জুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি বেড়ে চলেছে।
বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মোট ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটির শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ।
এদিকে সীমান্তে গোলযোগপূর্ণ সময়ের মধ্যেই নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার একটি কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণের সব প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের জানিয়েছে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের মতো বান্দরবানেও এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। এবারের পরীক্ষায় বান্দরবানের সাত উপজেলায় ১৫টি কেন্দ্র রয়েছে। মোট পরীক্ষার্থী ৫ হাজার ২২৫ জন। নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী এলাকা ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০০।
বর্তমান পরিস্থিতিতে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. রাশেদের কাছে। সে জানায়, তাদের বাড়ি ও স্কুল সীমান্ত এলাকার একেবারে কাছে। গত কয়েকদিন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, গোলার আওয়াজ আসা, গুলি, আরপিজি, মর্টারশেল এসে পড়ায় গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এতে তার ও তার মতো আরও বহু পরীক্ষার্থীর পড়াশোনা বিঘ্ন ঘটছে। চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে তারা।
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়ে তাদের লেখাপড়ার খবরাখবর নিচ্ছি। তাদের শিক্ষার উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতাও বিদ্যমান।