কক্সবাজার

চকরিয়ায় চালু হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

চকরিয়ায় এই বছর চালু হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অর্থায়নে প্রায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মিত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ‘চকরিয়া রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার’ নামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি। ট্রেনিং সেন্টারটি চালুর মধ্যদিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ১৮ উপজেলার হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীরা পাবেন সারা বছর স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক প্রশিক্ষণ সেবা।

জানা গেছে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের ১৮টি উপজেলার ট্রেনিং সেন্টারে কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, ঈদগাহ, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া, টেকনাফ, দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও চট্টগ্রামের পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বান্দরবানের লামা, আলীকদম ও নাইক্ষংছড়ি উপজেলার স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত মাঠ কর্মীদের সারাবছর ব্যাপী চিকিৎসা খাতে নানাবিধ প্রশিক্ষণ সেবা নিতে অনেকটা সহজ হয়েছে। যদিও আগে এসব প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সেবা নিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের রাজধানী ঢাকা বা চট্টগ্রাম যেতে হতো।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এইচএডি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৃতি সন্তান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান সরওয়ার এর বদন্যতায় স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর চিকিৎসাসেবার আলোক বর্তিকা হিসেবে এই ট্রেনিং সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। অবশ্য এই ট্রেনিং সেন্টারটি সে সময় কক্সবাজারে হবে নাকি চকরিয়ায় হবে এই নিয়ে রশি টানাটানিও চলে। শেষ মেশ কক্সবাজার-১ (চকরিয়া পেকুয়া) আসনের সাবেক এমপি জাফর আলমের ডিও লেটারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ চকরিয়া উপজেলার বরইতলী রাস্তার মাথাস্থ প্রস্তাবিত জায়গায় স্থাপনে নীতিগত সিদ্ধান্ত দিয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের টেন্ডার আহ্বান করেন।

টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেজেটি আইবি এআরএম (জেবি) কার্যাদেশ পেয়ে ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর ট্রেনিং সেন্টারের আধুনিক অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজের সূচনা করেছেন। এরইমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাঁচতলা ফাউন্ডেশনের ৩ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণ, পাঁচতলা ফাউন্ডেশনের ৫তলা বিশিষ্ট হোস্টেল (পুরুষ ও মহিলা) ভবন নির্মাণ, ১২৫০ বর্গফুট বিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ, চারতলা ফাউন্ডেশনের ৪ তলা ৮৫০ বর্গফুট বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ, ২ তলা বিশিষ্ট গ্যারেজ কাম ড্রাইভার কোয়ার্টার নির্মাণ, ১ তলা বিশিষ্ট সাব স্টেশন নির্মাণ, গার্ড রুম, সারফেস ড্রেইন এবং এপ্রোন নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর ও প্রধান গেইট নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সুচারুভাবে সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজের মধ্যে অভ্যন্তরিন সংযোগ সড়ক ও পেভমেন্ট, সাইড ডেভেলপমেন্ট কাজ, বৈদ্যুতিতক কাজ ও গভীর নলকূপ স্থাপন কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচএডি) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলীর তদারকির মাধ্যমে সহকারী প্রকৌশলী মো.মোরশেদুল আলমসহ সহকারী প্রকৌশলীদের একটি টিম সার্বক্ষনিক প্রকল্পে উপস্থিত থেকে কার্যাদেশ অনুযায়ী গুনগতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিত করে ইতোমধ্যে চকরিয়া রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টারের আধুনিক অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ সুচারুভাবে সমাপ্ত করেছেন।

কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচএডি) কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী সরকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অর্থায়নে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী রাস্তার মাথা এলাকায় স্থাপিত চকরিয়া রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টারটি এতদাঞ্চলের স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মীদের অবধারিত সুযোগ সৃষ্টি করেছে। আগে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্তত ১৮ থেকে ২০টি উপজেলা থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিতে ঢাকা বা চট্টগ্রামে করতে হতো। এখন ঘরের পাশে প্রশিক্ষণ সেন্টারটি স্থাপিত হওয়ায় সবার জন্য নানাবিধ সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশের আলোকে যথা সময়ে চকরিয়া রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টারের নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচএডি) কক্সবাজারের নিয়োজিত প্রকৌশলীরা সার্বক্ষনিক প্রকল্পে উপস্থিত থেকে কার্যাদেশ অনুযায়ী গুনগতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিত করে ইতোমধ্যে ট্রেনিং সেন্টারের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন। তবে এখনো কিছু কাজ চলমান রয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নতুন করে কিছু সময়ের আবেদন করেছেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে চলতি বছরের মধ্যে ট্রেনিং সেন্টারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *