চকরিয়ায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে ডাকাতি
কক্সবাজারের চকরিয়ায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে চাঁন্দের গাড়ির (জিপ গাড়ি) যাত্রীদের নগদ টাকা, মোবাইল-ল্যাপটপ লুট করে নিয়ে গেছে সশস্ত্র ডাকাতরা। এ সময় ওই গাড়ির চালক-হেলপার ও যাত্রীদের মারধর করে ডাকাতরা।
সোমবার (৮ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টার দিকে চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া সীমান্তের ফাঁসিয়াখালীর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার রাত ৯টার দিকে আলীকদম থেকে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে একটি জিপ গাড়ি। ওই গাড়িতে সাধারণ যাত্রী ছাড়াও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ছিল। জিপ গাড়িটি চকরিয়া-লামার সীমান্তবর্তী ব্রিজ পার হয়ে চকরিয়া প্রবেশ করার কিছু দূর চলে আসে। এ সময় সড়কের উপর গাছ ফেলে দেয় ১০-১২ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত। সড়কে গাছ ফেলতে দেখে চালক দ্রুত গাড়ি পিছনে নিয়ে যেতে চাইলে চালককে মারধর করে। পরে সশস্ত্র ডাকাতরা গাড়িটি চারিদিকে ঘিরে যাত্রীদের মারধর করে তাদের কাছে থাকা নগদ ৩-৪ লাখ টাকা, একটি ল্যাপটপ ও ৪-৫টি মোবাইল লুট করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়।
ওই গাড়িতে থাকা ব্যবসায়ী নুরুছফা বলেন, আমরা আলীকদম থেকে ১০-১২ জন ব্যবসায়ীসহ আরও কিছু যাত্রী চকরিয়া যাওয়ার জন্য জিপ গাড়িতে উঠি। আমাদের গাড়িটা চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী পৌঁছালে সড়কের উপর গাছ ফেলে ব্যারিকেড দেয় সশস্ত্র ডাকাতরা। আমাদের গাড়িচালক ওদের দেখে পিছনে চলে আসতে চাইলে চালককে লোহার রড দিয়ে মারধর করে গাড়ি থামাতে বাধ্য করে। পরে তারা আমাদের মারধর করে নগদ ৩-৪ লাখ টাকা, মোবাইল ও এক যাত্রীর একটি ল্যাপটপ ও আইফোন নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ৩০ বছর ধরে আলীকদমে মাছের ব্যবসা করছি। ওই গাড়িতে থাকা অধিকাংশ যাত্রীই ব্যবসায়ী। প্রতিদিনের মতো ব্যবসা শেষ করে চকরিয়ার বাড়িতে ফিরছিলাম। কোনদিন এই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হইনি। এই ঘটনায় লামা-আলীকদমের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
ওই গাড়ির আরেক যাত্রী ইঞ্জিনিয়ার ডাং ইয়াং মুরুং বলেন, গতকাল রাতে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে আলীকদম থেকে জিপ গাড়িতে উঠি। আমাদের বহন করা গাড়িটা চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে পৌঁছালে সশস্ত্র ডাকাতের কবলে পড়ি। এ সময় ডাকাতরা বন্দুকের বাট ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে আমার ল্যাপটপ, একটি আইফোন ও টাকা নিয়ে নেয়। এছাড়া যাত্রীদের মোবাইল-নগদ টাকা লুট করে। লুট করে নিয়ে যাওয়া ল্যাপটপে আমার গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট রয়েছে। ঘটনাটি চকরিয়া থানায় অবহিত করেছি।
চকরিয়া থানার অপারেশন অফিসার (এসআই) রাজিব সরকার বলেন, খবর পাওয়ার পর থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মনে হচ্ছে ছিনতাইকারীর দল এই ঘটনা ঘটিয়েছে। কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত খোঁজ নিচ্ছি।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এর আগে রাতেই খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছি। লুটপাটে জড়িতদের পরিচয় শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। চলছে মামলার প্রক্রিয়া।