চট্টগ্রামের ২৬ পাহাড়ে ৬৫৫৮ পরিবারের অবৈধ বাস
পাহাড়ে যারা ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে তাদের সরানো হবে। সেই সঙ্গে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আপডেট ১৫ দিনের মধ্যে উপস্থাপন করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৮তম সভায় তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তথ্যমতে, চট্টগ্রাম নগরীর ২৬টি পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ছয় হাজার ৫৫৮টি। ২৬টি পাহাড়ের মধ্যে ১৬টি সরকারি সংস্থার এবং ১০টি ব্যক্তিমালিকানাধীন। এর মধ্যে সরকারি পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ছয় হাজার ১৭৫টি আর ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৩৮৩টি। রেলওয়ের মালিকানাধীন সাতটি পাহাড়ে পাঁচ হাজার ৩৩২ জন অবৈধভাবে বসবাস করছে।
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, ‘যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ে বসবাস করছে তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে। যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস বিচ্ছিন্ন করবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। তার আপডেট আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমাদের জানাবে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘নগরের ২৬টি পাহাড়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছি।
কোনো অবস্থায়ই পাহাড় কাটা যাবে না। পাহাড় থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ১০ একর খাসজমি উদ্ধার করা হয়েছে। এক বছরে শুধু মহানগরে ৫১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।’
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের ফলে চট্টগ্রামে ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের পাহাড়ধসের পূর্বাভাসের পর থেকেই বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম মহানগরসহ উপজেলাগুলোতে কাজ করছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর আকবরশাহ, বিজয়নগর, ১ নম্বর ঝিল, টাংকির পাহাড়সহ মহানগরের সব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জনগণকে সচেতন করে মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাহাড়ের আশপাশের স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসাগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পাহাড়ি এলাকাগুলোতে মাইকিং ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ লক্ষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি সুসমন্বয়ের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে।