চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে জনশক্তি প্রশিক্ষণ দিতে চায় কোরিয়া

পেইন্টিং, ওয়েল্ডিং, মেকাট্রনিক্স, আইটি এবং ইন্ডাষ্ট্রিয়াল অটোমেশন খাতসহ বিভিন্ন বিভাগে চট্টগ্রামের জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহী কোরিয়ান সংস্থা কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা)।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ দ্যা চিটাগং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় এ কথা জানান কোইকার ডিরেক্টর জেনারেল জংমিন পার্ক।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে কোরিয়া। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে কোরিয়া বিভিন্ন সেক্টর বিশেষ করে পেইন্টিং, ওয়েল্ডিং, মেকাট্রনিক্স, আইটি এবং ইন্ডাষ্ট্রিয়াল অটোমেশন সেক্টরে প্রশিক্ষণ দিবে ও কর্মী নিবে। এরই অংশহিসেবে চট্টগ্রামে কি পরিমাণ জনশক্তি আছে তা গবেষণার মাধ্যমে বের করে শিল্পের চাহিদানুযায়ী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।’

প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের আজকের এই অবস্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে কোরিয়া। বাংলাদেশ থেকে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) এর আওতায় ৫টি সেক্টরে প্রশিক্ষণ দিবে কোরিয়া। আগামীতেও বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রামে উৎপাদনশীল খাতগুলোতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কাজ করবে কোরিয়া।’

এ সময় চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার ভৌগোলিক দূরত্ব সত্ত্বেও দুই দেশের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরিপোশাক খাত আজকের এই অবস্থানের পেছনে রয়েছে কোরিয়ার অবদান। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নেও কাজ করছে কোরিয়া। বাংলাদেশ থেকে কোরিয়ার দক্ষ মানবসম্পদ আমদানি এবং উৎপাদনশীল খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরীর উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।

সরকারের উন্নয়ন ধারায় কোরিয়ার উদ্যেগ সফল করতে ডাটাবেজ তৈরি করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামকে সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বিনিয়োগের আন্তর্জাতিক হাবে পরিণত করেছেন। এই অঞ্চলে গড়ে উঠছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরসহ ৫টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল। এসব অঞ্চলগুলোতে আগ্রহ দেখাচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু আমাদের প্রচুর জনশক্তি থাকলেও রয়েছে টেকনিক্যাল দক্ষতার অভাব। কোরিয়ার এ ধরণের উদ্যোগের ফলে শিল্পের চাহিদানুযায়ী দক্ষ জনশক্তি যেমন গড়ে উঠবে তেমনি বিভিন্ন দেশেও এসব দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা যাবে। চট্টগ্রামে শিল্প কারখানাগুলোতে সেক্টরভিত্তিক জনশক্তির প্রয়োজনীয়তা নির্ণয় করতে যৌথভাবে কোইকার সাথে একটা ডাটাবেজ তৈরীতে গবেষণা করতে চেম্বার কাজ করবে।

সভায় জনশক্তি কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, ‘সরকার দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য বর্তমান সরকার কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থার উপর জোর দিচ্ছেন। কোইকার এই ধরণের উদ্যোগ দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।’

এ সময় কোইকা’র ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়াং হিউনও, যুক্তরাষ্ট্রের ওকালোহমা ইউনিভার্সিটি প্রফেসর নামছুল লী, মেকানিক্যাল ডিজাইন এক্সপার্ট জং ইয়েন পার্ক, সাংকোংওয়াং ইউনিভার্সিটি প্রফেসর চাং ইয়াপ কিম, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ অঞ্জন শেখর দাশ, মাহফুজুল হক শাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *