চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে মায়ের মামলায় দুই ছেলে কারাগারে

চট্টগ্রামে মিনু রানী বড়ুয়া নামে এক বিধবা নারীর মামলায় কারাগারে তার দুই ছেলে সুমন বড়ুয়া (৪২) এবং অনুপম বড়ুয়াকে (৪০)। রোববার (৩১ মার্চ) সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভূঁঞার আদালতে জামিন শুনানি শেষে দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মিনু রানী বড়ুয়ার স্বামী মার্স করপোরেশন নামক সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন। মিনু রানীর স্বামী মারা যাওয়ার আগে তার স্বামী নিজের ও স্ত্রীর নামে সম্পত্তি কিনেন। তাদের নামে ছয়তলা একটি দালানও রয়েছে। পিতার মৃত্যুর পর তার ছেলেরা পৈত্রিক সম্পত্তি ও তাদের মায়ের সম্পত্তি বিক্রি করে তাদের টাকা দেওয়ার জন্য মা মিনু রানী বড়ুয়াকে জোর করতে থাকে। গত বছরের ১ অক্টোবর মা মিনু রাণীকে এক কক্ষে আটকে মিল্টন, সুমন ও তার স্ত্রী শেলী মিলে গলা টিপে ধরে। তখন মিনুর ভাই সমুদত্ত এসে মীমাংসার কথা বলে তাকে ছাড়িয়ে নেন। পরে মিল্টন বিদেশে চলে যান। এরপর ৩ ডিসেম্বর মিনু তার স্বামীর স্মরণে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে রাউজানে গ্রামের বাড়িতে যান। আলাদাভাবে সুমন, শেলী, আরেক ছেলে অনুপম এবং ভাই সমুদত্তও সেখানে যান। আচার অনুষ্ঠান শেষে সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে ফের মিনুর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন তারা। এবার তাদের সঙ্গে সমুদত্তও যোগ দেন। সুমন ও শেলী মিলে মিনুকে গলা টিপে ধরেন, অনুপম একটি ধারালো বটি মায়ের দিকে ছুঁড়ে মারে। তবে বটির আঘাত না লাগায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। এরপর তারা আলমারি ভেঙে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে শহরে চলে যায়।

সম্পত্তির জন্য বারবার নির্যাতনের ঘটনায় মিনু রাণী বড়ুয়া ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিন ছেলে, পুত্রবধূ ও ভাইসহ পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করেন। আদালত সরাসরি মামলা আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, দুই আসামি সুমন ও অনুপম গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন নেন। তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের শর্তে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের আদেশে রোববার তারা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দুপুরের দিকে তাদের কারাগারে নেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *