চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে সংস্কৃতিকর্মীদের কর্মসূচিতে যুবদলের হামলা, দুই ফটোসাংবাদিককে মারধর

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতিকর্মীদের প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে যুবদলের নেতাকর্মীরা।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর চেরাগী পাহাড় এলাকায় আজাদী গলিতে এ ঘটনা ঘটে।

এসময় কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ছবি তোলার সময় প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক জুয়েল শীল ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার ফটোসাংবাদিক এস এম তামান্নাকে মারধর করা হয়।

হামলার মধ্যে জুয়েল শীলের ক্যামেরার কাচ ভেঙে যায়, কেড়ে নেওয়া হয় এস এম তামান্নার মুঠোফোন।

স্থানীয়রা জানায়, যুবদলের কোতোয়ালি থানা শাখার যুগ্ম-সম্পাদক এম এ জলিলের সঙ্গে যুবদলকর্মী আলাউদ্দিনসহ ১৫-২০ জন হামলায় অংশ নেন।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এম এ জলিলকে এক বছর আগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আলাউদ্দিনের ব্যাপারে রাতের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বহিষ্কৃত হলেও জলিল কীভাবে রাজনীতি করছেন, সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি মোহাম্মদ শাহেদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ‘চট্টগ্রাম নগরের সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মীরা’ ব্যানারে সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন সংগঠনের সাংস্কৃতিক কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আজাদী গলিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে অবস্থান নেন ২৫-৩০ সংস্কৃতিকর্মী। পরে তারা ‘ও আমার দেশের মাটি’ সংগীত পরিবেশন করেন।

শান্তিপূর্ণভাবে মোমবাতি প্রজ্বালনের মধ্যেই কয়েকজন লাঠিসোঁটা হাতে ওই গলিতে প্রবেশ করে সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হামলা করে। ‘জয় বাংলা স্লোগান কেন দিচ্ছিস’ প্রশ্ন করে কয়েকজন যুবক সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর তেড়ে আসে। মোমবাতি প্রজ্বালনের কারণ জানতে চেয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে সংস্কৃতিকর্মীরা প্রতিবাদ করলে যুবকরা তাঁদের মারধর শুরু করেন।

ছবি তুলতে গেলে দুই সাংবাদিককে মারধর করা হয়। প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক জুয়েল শীলকে মারধর করা হয় এবং তার ক্যামেরায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এক যুবক।

আমাদের সময় পত্রিকার ফটোসাংবাদিক এস এম তামান্না ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাকে মারধর করে মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়।

সংস্কৃতিকর্মীরা জানান, এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। শান্তিপূর্ণ একটি কর্মসূচিতে এ ধরনের হামলা কাম্য নয়। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ারও নিন্দা জানান।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *