চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম ইপিজেড: কার দোষে পোশাক কারখানা উত্তাল ?

চট্টগ্রাম ইপিজেডের এক পোশাক কারখানায় বেতন বৃদ্ধির খবরে আন্দোলনে নেমেছেন বেশকিছু কারখানার শ্রমিকরা। গত মঙ্গলবার থেকে কাজ বন্ধ রেখে লাগাতার বিক্ষোভ করছেন ওই সব কারখানার শ্রমিকরা। ওই সময় তারা তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবি জানান।

জানা যায়, ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি ‘ইয়ংওয়ান’ তাদের শ্রমিকদের বোনাস হিসেবে গড়ে সাড়ে চার হাজার টাকা বেতন বাড়ায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের কারখানার শ্রমিকরা একই হারে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

চট্টগ্রাম ইপিজেডের বিভিন্ন কারখানায় আজও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। এই সময় শ্রমিকরা ভাঙচুর করারও চেষ্টা করে। শিল্প পুলিশের পদক্ষেপে বড় ধরণের অঘটন না ঘটলেও সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পুরো বিষয়টির পেছনে ইপিজেড এর বাইরের একটি চক্রের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলেও সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেন। অবশ্য বেপজা কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছে।

এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করে সরকার। ওই বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে পোশাক কারখানা মালিকরা। নতুন কাঠামোয় একজন শ্রমিকের প্রারম্ভিক বেতন সাড়ে চার হাজার টাকা বাড়ানো হয়। কিন্তু অভিজ্ঞ শ্রমিকদের একই পরিমাণ বেতন না বাড়ায় বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ) জানিয়েছে, মজুরি বৃদ্ধির ইস্যুতে ইপিজেডের বিভিন্ন কারখানায় অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। সরকার নির্ধারিত মজুরি পরিশোধ করা হলেও কিছু কিছু কারখানার শ্রমিকেরা বাড়তি সুবিধার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।

ইপিজেডের কারখানাগুলোতে ১২ হাজার ৮শ’ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এর বাইরে টাইম স্কেলের মতো একটি বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়। শ্রমিকদের চাকরির বয়সকালের উপর ভিত্তি করে এই বাড়তি সুবিধা নির্ধারণের স্বাধীনতা দেওয়া হয় কারখানা মালিকদের।

এই নির্দেশনা অনুযায়ী বড় কারখানাগুলো যে পরিমাণ সুবিধা দেয় ছোট কারখানাগুলোর পক্ষে সে পরিমাণ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ছোট কারখানার শ্রমিকেরা বাড়তি সুবিধার দাবিতে অসন্তোষ শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে গুজব ছড়ানোরও চেষ্টা চলে।

এরই জের ধরে গত পাঁচদিন ধরে চট্টগ্রাম ইপিজেডের মেরিম কু লিমিটেড, এইচ কে ডি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, আরএসবি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড, কেনপার্ক, প্রিমিয়ার গার্মেন্টস লিমিটেড, প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সীতাকুণ্ডে প্যাসিফিক নিটেক্স লিমিটেড, কর্ণফুলীতে ফোর এইচ টেক্সটাইল, স্মার্ট জিন্স ও এনএসটি ফ্যাশনসহ অনেক কারখানায় অশান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে।

শিল্প পুলিশ চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘আমরা মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষকে নিয়েই বসেছি। কিছু কিছু কারখানার শ্রমিকরা সমঝোতা করে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *