চট্টগ্রাম কাস্টমসের চার কর্তা, ফ্ল্যাট-প্লটও কিনেছেন একসঙ্গে
চট্টগ্রাম কাস্টমসে টাকা হাতানোর চক্রে চার কর্তা, ফ্ল্যাট-প্লটও কিনেছেন একসঙ্গে।তারা চারজনই কাস্টমস কর্মকর্তা।এর মধ্যে একজন ছাড়া বাকি তিনজনই বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন। আর্থিক সুবিধা নিয়ে কাস্টমসে আটকে থাকা পণ্য ও মালামালগুলো ছাড়ান তারা। তাদের টার্গেট ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। বিভিন্ন সোর্সদের মাধ্যমে কব্জায় ফেলে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন টাকা। কিন্তু চক্রটির কথা মতো পণ্য খালাস কাজ করতে পারলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
অভিযুক্তরা হলেন কাস্টম হাউস চট্টগ্রামের গেইট ডিভিশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) মো. ছাইফুল ইসলাম, কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকার (পূর্ব) রাজস্ব কর্মকর্তা তৈয়বুর রহমান, কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট সার্কেল জামালপুরের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুস ছামাদ এবং কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট মানিকগঞ্জের সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ভূঁঞা মফিজুর রহমান।
অভিযোগ বিবরণীতে বলা হয়, এক ব্যবসায়ীর একগুচ্ছ কৃষি ও মেশিনারিজ পণ্য দীর্ঘদিন কাস্টমসে আটকে থাকায় ক্ষতির মুখোমুখি হন ওই ব্যবসায়ী। ২০২৩ সালের আগস্টের শেষের দিকে অভিযুক্তদের চারজনের চক্রের একজন ওই পণ্যগুলো খালাস করে দিতে ২৫ লাখ টাকা নেন ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। পরে অর্থ ফেরত না দিয়ে দীর্ঘদিন সময়ক্ষেপণ করেন এবং পণ্য খালাসেও ব্যর্থ হন তারা। সম্প্রতি ওই ব্যবসায়ীর পণ্যগুলো নিলামে তুলে কাস্টমস।
জানা গেছে, ইতোপূর্বে তাদের পণ্য খালাসের ফাঁদে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। তারা নামে একাধিক অভিযোগ দুদক কমিশন বরাবরে গেলেও একটিও অনুসন্ধানের মুখ দেখেনি।
চার কর্মকর্তার একত্রে কেনা সম্পদ- যৌথ অংশীদারে কিনা ঢাকার দক্ষিণ খান ফয়দাবাদ মৌজায় মসজিদ রোডে পাঁচ কাঠার জায়গার ওপরে তারা নির্মাণ করেছে সাত তলা ভবন। জমি ও ভবনের বর্তমান বাজারমূল্যে প্রায় ৬ কোটি টাকা। একই মৌজায় ৫ কাঠা জায়গা নিয়ে করেছেন গরুর ফার্ম। ওই ফার্মে বর্তমানে ১০টি গরু রয়েছে। যেগুলোর মূল্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ টাকা। একই এলাকায় বায়তুর রউফ জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ১৫ কাঠা জায়গা, যার মূল্যে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। ওই সম্পত্তির হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদের অভিযুক্ত সাবেক ও বর্তমান চার কাস্টমস কর্মকর্তার নাম রয়েছে। ওই এলাকায় লাল মসজিদের পশ্চিম গলিতে ১০ কাঠা জায়গায় রয়েছে। জায়গাটি বর্তমানে গাছ-লতাপাতায় আবৃত অবস্থায় রয়েছে।
চারজনের নামে ফ্ল্যাট- ঢাকা উত্তরায় চারজনরে নামে-বেনামে রয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকার মূল্যের একেক জন থেকে ৩ থেকে ৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ ফাইদাবাদ এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ির সংলগ্নে তৈয়বুর রহমান ও তার পরিবারের নামে রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে একটি ফ্ল্যাট তার মেয়ের জামাইকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।