চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর : টাকায় মিললো কেটে ফেলা লাগেজ!

মোহাম্মদ আরমান। লোহাগাড়ার আমিরাবাদের এ বাসিন্দা থাকেন সৌদি আরবের মদিনায়। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরবেন। তাই আত্মীয়-স্বজনের জন্য নামিদামী উপহারসামগ্রী নিয়েছেন প্রবাসী এ ব্যাবসায়ী। দেশে আসার দু’সপ্তাহ আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইন্সের একটি ফ্লাইটে পাঠিয়ে দেন। তিনি আসেন গত ৩ মার্চ। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিজের পাঠানো লাগেজ সংগ্রহ করতে হাজির হন সৌদি প্রবাসী আরমান। অতিরিক্ত মালামাল বহনের ভাড়া এবং শুল্কযুক্ত পণ্য আনায় দিতে হয় অতিরিক্ত ৪০ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট শাখায় টাকা জমা শেষে লাগেজ বুঝে নিতেই চোখ কপালে ওঠে প্রবাসী আরমানের। কারণ তার লাগেজ ছিল কাটা-ছেঁড়া!

আরমান জানান, টাকা প্রদান করার পরও প্রায় ৭৪ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল খোয়াতে হয়েছে। এ নিয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করেও মেলেনি কোন সুরাহা। যার কারণে অসহায় হয়েই ফিরতে হয়েছে এ রেমিট্যান্সযোদ্ধাকে। খবর নিয়ে জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিমান বাংলাদেশের বিজি-০১৩৮ ফ্লাইটে আসার কথা ছিল সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আরমানের। কিন্তু জেদ্দা বিমানবন্দরে লাগেজ বিমানে তুলে দিলেও এদিন আসতে পারেননি তিনি। পরবর্তীতে গত রবিবার সকাল সাড়ে আটটায় একই বিমানের বিজি-১৩৬ ফ্লাইটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।

সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আরমান বলেন, চট্টগ্রামে আসার পর লাগেজ নিতে গেলেও দুটি লাগেজের ভাড়া ও কাস্টমস শুল্ক চান সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এদিন আর তা না নিয়ে আমি চলে যাই। সোমবার বিমানবন্দরে গিয়ে ভাড়াবাবদ ৩০ হাজার এবং কাস্টমসের শুল্কবাবদ ১০ হাজারসহ সর্বমোট ৪০ হাজার টাকা প্রদান করি। সব কার্যক্রম শেষে যখন লাগেজ নিতে যাই, তখন লাগেজ কাটা পাই। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাইলে কেউ কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। কর্মকর্তাদের সামনেই লাগেজ মেপে দেখা যায় ৭ কেজি মালামাল কম ছিল লাগেজটিতে। লিখিত অভিযোগ দিতে চাইলেও কেউই আর এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। পরে কোন উপায় না পেয়ে আমি বাড়ি চলে আসি। আমার লাগেজ থেকে অন্তত ৭৪ হাজার টাকার মালামাল চুরি হয়েছে।

লাগেজ কাটা থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে হারানো ও প্রাপ্তি শাখায় কর্মরত মোহাম্মদ ইকবাল খসরু বলেন, অধিকাংশ লাগেজ কাটার ঘটনা যে দেশ থেকে আসে ওই দেশে হয়ে থাকে। কেননা ইলেক্ট্রনিক পণ্য থাকলে তা স্ক্যানে আটকে যায়। তখন ওই দেশের এয়ারপোর্টেই তা কেটে রেখে দেওয়া হয়। এখানে কাটার সুযোগ নেই। কেননা বিমানবন্দরের সবস্থানেই ক্যামেরা আছে। তবুও আরমান নামের ওই যাত্রীর লাগেজ কাটার বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে বলেছি।

যদিও বিমানবন্দরের লাগেজ চুরি, লাগেজ কেটে মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা অনেকটাই পুরনো। তবে যাত্রী হয়রানি কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ বলেন, লাগেজ কাটার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *