চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ৪৫ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ ফুরিয়েছে দু’বছর আগেই
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের দেয়ালে দেয়াল এখনও ঝুলছে মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র (ফায়ার এক্সটিংগুইশার)। দুই বছর আগে এসব যন্ত্রের মেয়াদ চলে গেলেও তা বদলানোর প্রয়োজন মনে করেনি রেল কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে রেলওয়ের প্ল্যাটফর্ম, স্টেশনে ও কোনো বগি (কোচ) আগুন লাগলে তা নির্বাপণের নেই কোনো ব্যবস্থা। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করলেও তাদের নিরাপত্তা কোনো মাথা ব্যথায় নেই কর্তৃপক্ষের।
সোমবার (২০ মে) চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় লাগানো রয়েছে অন্তত ৪৫টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। এসব যন্ত্রের গায়ে মেয়াদের ঘরে লেখা আছে ২০২২ পর্যন্ত। সেই হিসেবে এসব বোতলের মেয়াদ পার হয়েছে দুই বছর আগেই।
একইসঙ্গে প্ল্যাটফর্মে কোনো ট্রেনের বগিতে যদি দুর্ঘটনাবশত আগুন লাগে তা নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও চোখে পড়েনি। এদিকে বগিগুলোতে পানি সরবরাহের লাইন থাকলেও বর্তমানে তা বন্ধ। টাইগারপাস মার্শালিং ইয়ার্ডে কোচগুলো পরিষ্কারের জন্য পাঠানো হলে সেখান থেকেই ট্যাংকে পানিভর্তি করা হয়। ফলে স্টেশনের এসব লাইন পরিত্যক্ত বললেই চলে।
জানা গেছে, রেলওয়ে স্টেশনের এসব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াহেদিকা এন্টারপ্রাইজ’। তারা ২০২২ সালে স্টেশনের এসব যন্ত্র সরবরাহ করে। পরে রেলের বাজেট না থাকায় এসব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আর পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ওয়াহেদিকা এন্টারপ্রাইজ’র সত্বাধিকারী অলিউর রহমান বলেন, ‘২০২২ সালের জুনের পর রেলওয়ের বাজেট না থাকায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সরবরাহের নতুন করে চুক্তি করা হয়নি।’
অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দুই বছরেও কেন পরিবর্তন হয়নি—জানতে চাওয়া হয় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে। এরপর তিনি প্রতিবেদককে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কত বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন? আপনি কি নিচের দপ্তর থেকে জেনে এসেছেন? তারা তো এসব বিষয়ে আমাকে কিছু জানাননি।’
প্রতিবেদক সব জেনে এসেছেন বলে জানালে তিনি বলেন, ‘আমি মার্চে যোগদান করেছি। এ বিষয়টি আমাকে কেউ অবহিত করেনি।’
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দীনমনি শর্মা বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোর মেয়াদ শেষ হলে তা কোনো কাজেই আসে না। তা নতুন করে রিফিল করা ছাড়া অকেজো।’