চট্টগ্রামশিক্ষা

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ‘পরীক্ষা ছাড়াই’ পাস আরও ১৫ শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও দুই শিক্ষার্থীর জিপিএ-৫ পাওয়ার ঘটনা খোঁজ করতে গিয়ে আরও ১৫ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। যাদের প্রত্যেকে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে অংশগ্রহণ করেননি, অথচ ওই বিষয়ে পাস করেছেন।

পরীক্ষা না দিয়ে পাস করা মোট ১৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২ জন ছাত্রী এবং ৫ জন ছাত্র রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষা বোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৭ জনের ফল বাতিল করা হয়।

জানা যায়, চলতি বছরে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় বাঁশখালীর চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও সদ্য প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এই দুই শিক্ষার্থী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে।

পরীক্ষা ছিল না মনে করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি দুই পরীক্ষার্থী। পরে তারা কেন্দ্রে পৌঁছালেও ততক্ষণে পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। এ ঘটনায় সেদিন পরীক্ষা দিতে না পারায় কেন্দ্র সচিব ও সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকের গাফিলতি রয়েছে বলে অনেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন।

জানা যায়, ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৭৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে পাস করে ৭২ জন। একজন শিক্ষার্থী ফেল করেছেন রসায়ন বিষয়ে। অর্থাৎ যে দুই শিক্ষার্থী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তারাও পাস করেছে এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে।

বিষয়টি জানাজানি হলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল প্রক্রিয়া যাচাই-বাছাই করতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের দুজন প্রোগ্রামার আনা হয়। তারা গত ৬ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত এ নিয়ে কাজ করেন। তাদের অনুসন্ধানে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসার মতো অবস্থা হয়। জানা যায়, শুধু দুইজন নয়, আরও ১৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা ছাড়াই পাস করেছেন।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, দুই পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থেকে পাস করার বিষয়ে জানতে পেরে আমি হতবাক হয়ে যাই। পরে চিন্তা করলাম হয়তো আরও থাকতে পারে, এমন অনুমান থেকে যাচাই-বাছাই শুরু করি। এ কাজের জন্য লোকবল সংকট থাকায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে দুজন বিশেষজ্ঞ আনা হয়। পরে ১৭ জনের তথ্য পাই। তাদের ফল বাতিল করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত করতে কাজ করছি। ফল জালিয়াতির সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তদন্তে তাদের নাম বেরিয়ে আসবে। ফল জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে বোর্ডের বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *