চট্টগ্রামমীরসরাই

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) সুষ্ঠু ভোট হলে শেষ হাসি গিয়াসের

মিরসরাইয়ে গিয়াস মিয়ার পরিচিতি বেশি। মাঠে মার খাওয়া নেতা তিনি। সুষ্ঠু ভোট হলে, ভোট দিতে যেতে পারলে মানুষ তাকেই ভোট দিবে।’— মায়ানি ইউনিয়নের এক ভোটারের মুখের কথা এটি।

আর আওয়ামী লীগকর্মী শাহ আলমের মতে, রাজনীতির মাঠে ‘পোড় খাওয়া’ নেতা গিয়াস উদ্দিন। তাঁর তুলনায় নির্বাচনী মাঠে নৌকার প্রার্থী রুহেল একেবারেই আনকোরা। বাবার কারণে ছেলের সঙ্গে থাকলেও অনেকে সুযোগ পেলে ভোটটা ঈগলের ভাগেই দিবেন।

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে ভোট নিয়ে এভাবেই হিসাব কষছেন স্থানীয় ভোটার ও সাধারণ নেতাকর্মীরা। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোশাররফপুত্র মাহবুব উর রহমান রুহেল। নির্বাচনী মাঠে তাঁকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন।

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ শুরু হয়েছে দুই প্রার্থীর। প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত নাওয়া খাওয়া ভুলে কনকনে শীত উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে শিডিউল করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন (ঈগল) ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাকি ৫ প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চোখে পড়ছে কম।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের নির্বাচনী উপ-কমিটির ১ নম্বর সদস্য নুরুল হুদা বলেন, ‘আমরা অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। বিজয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী। উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে আমাদের প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রত্যেকদিন কোনো না কোনো এলাকায় আমাদের নেতাকর্মীদেরকে নৌকার প্রার্থীর লোকজন হামলা করছে, অফিস ভাঙচুর করছে, পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছে। এমনকি ভোটের পরে নেতাকর্মীদের বাড়িছাড়া করবে বলেও হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। তবে আমরা শঙ্কিত নই। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। যত ভোটার উপস্থিতি বাড়বে তত আমাদের প্রার্থীর বিজয়ের ব্যবধান বেশি হবে।’

এদিকে উপজেলায় প্রায় ৫৮টি ভোটকেন্দ্র অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা। এর মধ্যে দুটি ইউনিয়নের সবকটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, জেলা প্রশাসক, দুই থানা ও স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত আকারে জানিয়েছি। প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকায় গুরুত্বের সাথে কাজ করে আর ভোটার যদি ভোটকেন্দ্রে নির্বিঘ্নে যেতে পারে তাহলে আমরা বিপুল ভোটে জয়ী হবো ইনশা-আল্লাহ।’

মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী সমন্বয় কমিটি ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার কেন্দ্র ভিত্তিক উঠান বৈঠক দিয়েছে। প্রতিদিন প্রার্থী বিভিন্ন উঠান বৈঠকে যাচ্ছে, গণসংযোগ করছে। এছাড়া যার যার ওয়ার্ডে নেতা-কর্মীরা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটারদের কাছ থেকে যে সাড়া পাচ্ছি, ৭ জানুয়ারি বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমরা জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ।’

২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী এ উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার মোট জনসংখ্যা চার লাখ ৭১ হাজার ৭৫২ জন। মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫২৫ জন। পুরুষ ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৪১। মহিলা ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮২ জন। তৃতীয় লিঙ্গ ২। মোট ভোটকেন্দ্র ১০৬টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *