চট্টগ্রামস্বাস্থ্য

চমেক : ৮ নার্সের কাজ সামলান একজন

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিত্র ঠিক উল্টো। বরং একজন নার্স সেবা দিচ্ছেন গড়ে ২৩ জন রোগীকে। এতে করে চাহিদার চেয়ে ৮গুণ বেশি চাপ নিয়ে অগত্যা সেবা দিতে হচ্ছে এসব স্বাস্থ্যকর্মীকে। যে কারণে চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অথচ হাসপাতালে রোগীকে ওষুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে সার্বিক দেখভালের দায়িত্বে থাকেন নার্সরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী হাসপাতালের রোগী এবং নার্সের অনুপাত ১ : ৩। অর্থাৎ তিনজন রোগীর বিপরীতে নিয়োজিত থাকবেন একজন নার্স।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চরম নার্স সংকট ভুগছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। কাগজে কলমে ২২শ শয্যার হাসপাতালটিতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে সাত হাজার রোগীর সেবায় কর্মরত নার্স আছেন মাত্র সাড়ে ৯শ জন। যা প্রয়োজনের তুলনায় ৬২% কম। তাই পর্যাপ্ত নার্স পদ সৃষ্টি এবং পদায়নের তাগিদ সংশ্লিষ্টদের।

তথ্য অনুসারে, ২২শ শয্যার হাসপাতালটিতে নার্সের পদ রয়েছে ১ হাজার ২৩৮ জনের। বর্তমানে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৪০ জন। এরমধ্যে বিভিন্ন ধরনের ছুটিতে থাকেন অন্তত একশ জন। সবমিলিয়ে ওয়ার্ডে নিয়োজিত থাকেন সর্বোচ্চ ৯শ থেকে ৯৫০ জন। যারা তিন শিফটে কাজ করেন। অর্থাৎ গড়ে প্রতি শিফটে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন ৩শ জনের কিছু বেশি সংখ্যক নার্স।

চট্টগ্রাম বিভাগের বৃহৎ সরকারি এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৪৬টি ওয়ার্ড এবং ৩৫টি ওপিডি এবং জরুরি বিভাগে প্রায় সাড়ে সাত হাজার রোগী সেবা গ্রহণ করে থাকেন। এরমধ্যে ভর্তি রোগীর সংখ্যা গড়ে সাড়ে তিন হাজার। তিন শিফটে এসব রোগীর সার্বিক দেখভালের জন্য নিয়োজিত আছেন মাত্র সাড়ে ৯শ জন নার্স। প্রতি শিফটে গড়ে ৩শ জনের কম-বেশ নার্স সেবা দিয়ে থাকেন। যা রোগীর তুলনায় খুবই অপ্রতুল। একজন রোগীকে সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকের চেয়ে নার্সদের ভূমিকা কোন অংশেই কম নয়।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ২২শ শয্যার হাসপাতালে ভর্তিকৃত গড়ে সাড়ে তিন হাজার রোগীর জন্য স্বল্প সংখ্যক নার্স দিয়ে সেবা প্রদান অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ১৩১৩ শয্যা হতে সরকারিভাবে ২২শ শয্যায় উন্নীত করা হলেও নার্সের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়নি। অথচ সেবাদানের ক্ষেত্রে নার্সদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংকট নিয়েও মানসম্মত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে নিরবিচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অধিক সংখ্যক নার্স প্রয়োজন। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সমাধান হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *