জাতীয়স্বাস্থ্য

চেম্বার-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া নয়

লাইসেন্সধারী হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া ডাক্তারের চেম্বার বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া এবং বিএমডিসির স্বীকৃত অবেদনবিদ ছাড়া যে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার করা যে নিষিদ্ধ, দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

পাশাপাশি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখাসহ ১০টি নির্দেশনা এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে। খবর বিডিনিউজের।

খতনা করাতে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করার পর শিশুর মৃত্যুর দুটি ঘটনার পর গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমুহ) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসানের পাঠানো এক অফিস আদেশে এসব নির্দেশনা দেওয়া হল।

মঙ্গলবার ঢাকার মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে খতনা করাতে এসে মারা যায় ১০ বছরের শিশু আহনাফ তাহমিন আয়হাম। ওই ঘটনায় বুধবার ক্লিনিকের দুজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ওই প্রতিষ্ঠানের রোগ নির্ণয়ের অনুমোদন থাকলেও চিকিৎসা সেবা দেওয়ার অনুমোদন ছিল না।

বৃহস্পতিবার দেশের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো আদেশে বলা হয়েছে– ১. বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক এর লাইসেন্সের কপি প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ পথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে। ২. সকল বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িতপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা/কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে। ৩. যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে, কিন্তু শুধু ডায়াগনস্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে, তারা যথাযথ লাইসেন্স ছাড়া কোনেভাবেই সেই সেবা দিতে পারবে না। ৪. ডায়াগনস্টিক সেন্টার/প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরিতে লাইসেন্স রয়েছে, কেবল সেই ক্যাটাররিতে নির্ধারিত পরীক্ষা–নিরীক্ষা ছাড়া কোনোভাবেই অন্য পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা যাবে না এবং ক্যাটারগরি অনুযায়ী প্যাথলজি/মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে। ৫. বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সকল শর্ত বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. হাসপাতাল/ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সকল চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদ, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। ৭. হাসপাতাল/ক্লিনিক এর ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি/প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড একজন চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে। ৮. লাইসেন্সপ্রাপ্ত নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া কোনো অবস্থাতেই চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ (অ্যানেস্থেসিয়ালজিস্ট) ছাড়া কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি/ প্রসিডিউর করা যাবে না। ৯. সকল বেসরকারি নিবন্ধিত/লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অবশ্যই ‘লেবার রুম প্রটোকল’ মেনে চলতে হবে। ১০. নিবন্ধিত/লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই ‘অস্ত্রোপচার কক্ষের আচরণবিধি’ মেনে চলতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *