জাতীয়

ছেলেকে চড়, আদালতে যাচ্ছেন না আইনজীবীরা

আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো এক আসামিকে চড় মারার অভিযোগে আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা।আইনজীবীদের অভিযোগ, বিচারকের নির্দেশেই একজন পুলিশ কনস্টেবল আসামিকে সবার সামনে চড় মেরেছেন।লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুসরাত জামানের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। তাকে অপসারণের দাবি জানিয়ে গত তিনদিন ধরে আইনজীবীরা তার আদালতের এজলাসে যাচ্ছেন না।

মঙ্গলবারও (২১ নভেম্বর) কোনো আইনজীবী তার এজলাসে যাননি। গত রোববার (১৯ নভেম্বর) থেকে এমন অবস্থা বিরাজ করছে।রবিবার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান আল মাহমুদ এক চিঠির মাধ্যমে আইনজীবীদের বিচারক নুসরাত জামানের আদালতে যেতে নিষেধ করেন।এর আগে গত ১৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে আইনজীবীদের এক সাধারণ সভা হয়। সেখানে এ সিদ্ধান্ত নেয় আইনজীবী সমিতি।

আইনজীবীরা জানান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুসরাত জামানের অপসারণ ও সন্তোষজনক প্রতিকার না পাওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য তারা আদালত বর্জন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৪ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাঠগড়ায় আবদুল্লাহ আল মামুন নামে এক আসামিকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ উঠেছে, এ আদালতের বিচারক নুসরাত জামানের নির্দেশেই তাকে চড় মারা হয়েছে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) আইনগত সমাধান পেতে ভুক্তভোগী আবদুল্লাহ আল মামুন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছেও অভিযোগ করেন তিনি। মামুন চট্টগ্রামের মিরসরাই থানার মোবারকঘোনা গ্রামের সামছুল হকের ছেলে।

অভিযোগে আবদুল্লাহ আল মামুন উল্লেখ করেন, স্ত্রী সুমাইয়া সুলতানা বাদী হয়ে তার (মামুন) নামে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুকের মামলা (সিআর ৭৫/২০২৩) করেছেন। মামলাটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আদালতে বিচারাধীন। মঙ্গলবার সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য ছিল। বাদীপক্ষ দুজন সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করে। সাক্ষীর জেরা শেষে মামুন এজলাস থেকে বের হয়ে বারান্দায় যান। এসময় তাকে সুমাইয়া ও তার মা পারুল বেগম মারধর করেন। বিষয়টি তিনি আদালতের বিচারক নুসরাত জামানকে জানান। কিন্তু বিচারক তার কথা না শুনে তাকে কাঠগড়ায় ডেকে নেন। পরে বিচারক পুলিশ কনস্টেবল কবিরকে নির্দেশ দেন, মামুনকে দুটি চড় মারতে। বিচারকের নির্দেশে বিচারপ্রার্থী জনগণের সামনেই কনস্টেবল কবির তাকে দুটি চড় মারেন। এসময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়। বিচারক তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, পুলিশ দিয়ে চড় দিইয়েছি, এখন আমি নিজে তোকে চড় মারব। পরে বিচারকের নির্দেশে মামুনকে জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। মামুনের আইনজীবী আবদুর রহিম রাজু বলেন, এজলাসে এমন ঘটনা আইন সম্মত নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *