‘জাতীয়তাবাদী’ ব্যানার ঝুলিয়ে হিন্দু ব্যবসায়ীর দুই দোকান দখল
চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দীন বাজারে এক হিন্দু ব্যবসায়ীর দুটি দোকান রাতারাতি দখল করে সেখানে চজাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের অন্তর্ভুক্ত চট্টগ্রাম দোকান কর্মচারী সমিতি’ নামের একটি সংগঠনের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের অনুসারী পরিচয় দিয়ে রেয়াজউদ্দিন বাজার পাখি গলির বন্দর বিতান মার্কেটের দোকানগুলো দখল নেওয়া হয়। দোকানগুলোর মালিক প্রবীন কুমার ঘোষ নামের এক ব্যবসায়ী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত হঠাৎ করে দোকান দুটিতে ঢোকে। ‘বঞ্চিত হকার্স (ফেরিওয়ালা) সমবায় সমিতি’ একটি সংগঠন তাদের অফিস হিসেবে ব্যবহারের জন্য দোকান দুটি ভাড়ায় নিয়েছিল। দুর্বৃত্তরা দোকানে ঢুকেই বিএনপি নেতা আবুল হাশেম বক্করকে ফোন করে। এরপরই সেখানে থাকা কয়েকজনকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এ সময় আহত হন ঘটনাস্থলে থাকা বঞ্চিত হকার্স (ফেরিওয়ালা) সমবায় সমিতির সদস্য এএম রিয়াজ ভুট্টো ও ব্যবসায়ী ইসহাক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার একপর্যায়ে তারা দোকান দুটির শাটার টেনে বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তামাকুমন্ডি বণিক সমিতির সভাপতি সরওয়ার কামাল ছুটে এসে দোকানগুলোতে তালা না লাগানোর অনুরোধ জানালেও দুর্বৃত্তরা তার কথাও শোনেনি। দোকানের বাইরে এ সময় একটি ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি দিয়ে টাঙানো ব্যানারে লেখা ছিল— ‘জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের অন্তর্ভুক্ত চট্টগ্রাম দোকান কর্মচারী সমিতি’।
জানা গেছে, বেশ কিছু দুর্বৃত্তসহ হামলায় নেতৃত্ব দেন মিজানুর রহমান, ইদ্রিস ওরফে বাটি ইদ্রিস, ভাতঘর হোটেলের মো. সোহেল, মো. নাজিম প্রকাশ কট নাজিম। তারা সবাই চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অভিযোগের বিষয়ে আবুল হাশেম বক্করের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি।
এদিকে শনিবার (১০ আগস্ট) এ ব্যাপারে সনাতনী সম্প্রদায়ের ভুক্তভোগী দোকানমালিক প্রবীন কুমার ঘোষ দোকান ফেরত চেয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডারের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।