ধর্ম

জান্নাতিরা যেভাবে পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে, সে সেখানে সুখে-স্বচ্ছন্দে আয়েশের মধ্যে ডুবে থাকবে, কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা তাকে পাবে না এবং তার পোশাক-পরিচ্ছদ ময়লা বা পুরাতন হবে না, আর তার যৌবনও নিঃশেষ হবে না। (মুসলিম, হাদিস : ৫৬২১0

হজরত সালমান ফারসী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূল সা. বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের আগে প্রত্যেক জান্নাতিকে একটি করে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। এতে লেখা থাকবে—

পরম দয়ালু আল্লাহর নামে। এটা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে অমুকের পুত্র অমুকের নামে দেওয়া ছাড়পত্র। তাকে সমৃদ্ধ সুমহান জান্নাতে প্রবেশ করাও।

জান্নাতে প্রবেশের পর জান্নাতিরা পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, কুশল বিনিময় করবেন, যেমন পৃথিবীতে মানুষ প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেন এবং কুশল বিনিময় করেন।

এ বিষয়ে আবু সালাম র. বলেন, আমি আবু উসামা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বলতে শুনেছি যে—

এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, জান্নাতিরা কি পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করবে? উত্তরে রাসূল সা. বললেন, হ্যাঁ, করবেন। উঁচু স্তরের জান্নাতিরা নিম্ন স্তরের জান্নাতিদের কাছে এসে সালাম বিনিময় ও ভাব আদান-প্রদান করবেন। তবে নিম্ন স্তরের জান্নাতিরা আমলের ত্রুটির কারণে উঁচু স্তরের জান্নাতিদের কাছে যেতে পারবে না।

উবাদাহ ইবনুস সামিত রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন : জান্নাতের স্তর হবে একশটি প্রত্যেক দুই স্তরের মাঝখানের দূরত্ব হবে আসমান ও জমিনের দূরেত্বের পরিমাণ। জান্নাতুল ফিরদাউসের স্তর হবে সর্বোপরি। তা হতেই প্রবাহিত হয় ঝরনাধারা এবং তার উপরেই রয়েছে মহান প্রভুর ’আরশ’। অতএব তোমরা যখনই আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করবে, তখন ফিরদাউস জান্নাতই চাইবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫২৯, বুখারি, হাদিস : ২৭৯০)

জান্নাতিরা পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মুখোমুখি বসে দুনিয়ার কথা আলোচনা করবে। জান্নাতে প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহর প্রশংসা করবে। এবং তারা কী ধরনের কথাবার্তা বলবে সে বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—

وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَاءَلُونَ قَالُوا إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِي أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَانَا عَذَابَ السَّمُومِ إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلُ نَدْعُوهُ ۖ إِنَّهُ هُوَ الْبَرُّ الرَّحِيمُ

তারা একে অপরের দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করবে এবং বলবে, নিশ্চয় আমরা পূর্বে পরিবার-পরিজনের মধ্যে শংকিত অবস্থায় ছিলাম। অতঃপর আমাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে উত্তপ্ত ঝড়ো হাওয়ার শাস্তি হতে রক্ষা করেছেন। নিশ্চয় আমরা পূর্বেও আল্লাহকে আহ্বান করতাম। নিশ্চয় তিনি কৃপাময়, পরম দয়ালু।’ (সূরা তুর, আয়াত : ২৫-২৮)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *