টানা ভারী বর্ষণে নোয়াখালীতে পানি বাড়ছেই
টানা ভারী বর্ষণ এবং মুহুরী নদীর পানিতে নোয়াখালীর ৮ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন জেলার ২২ লাখের বেশি মানুষ। এদিকে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল থেকে নোয়াখালীতে চলছে বজ্রসহ ভারী বর্ষণ। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলারয় ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে আরও নতুন নতুন এলাকায়। ভেসে গেছে কয়েক শ মাছের প্রজেক্ট, মুরগি খামার, আমনের বীজতলা, শাকসবজি খেত এবং ঝড়ো বাতাসে ভেঙে গেছে কাঁচা গাছপালা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে কয়েকটি এলাকা।
জানা গেছে, বন্যার ফলে আশপাশের নালায় জমে থাকা ময়লা আবর্জনা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে রোগজীবাণু ছড়িয়ে অনেক শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় ডায়রিয়ার প্রভাব দেখা দিয়েছে। তারই ফলশ্রুতিতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ২৬ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বিপরীতে ২০০ শতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী বলেন, “আমরা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করছি। যেহেতু আমাদের এলাকা ফেনীর কাছাকাছি তাই আমরা মানুষদের বেশি বেশি সতর্ক করছি।”
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনভর বজ্রসহ বৃষ্টি হবে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, “বন্যা কবলিত এলাকায় আমরা মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তাদের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ট্যাবলেট ও স্যালাইন বিতরণ করা হচ্ছে। হাসপাতালে পানিবাহিত রোগের কারণে ভর্তি রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে আমরা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। মাঠপর্যায়ে আমাদের উপজেলার নির্বাহী অফিসারগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।”