টেকনাফের ওপারে গোলাগুলি-মর্টার শেল নিক্ষেপ, আতঙ্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর আশপাশের কয়েকটি এলাকায় রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আজ সোমবার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত মংডু টাউনশিপের উত্তরে কুমিরখালি, বলিবাজার, নাইচাডং, কোয়াচিদং, শিলখালি, কেয়ারিপ্রাং ও পেরাংপ্রু গ্রামে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে এপারে টেকনাফ সীমান্ত কেঁপে ওঠে।
গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বলিবাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যপাী আকাশপথে হামলা চালায় মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী। সীমান্তচৌকি দখল ও পুনরুদ্ধার নিয়ে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ওপারের শক্তিশালী বোমা ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এপারে টেকনাফের সাবরাং, টেকনাফ পৌর শহর, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নে কম্পন অনুভূত হয়। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটান ইউনিয়নগুলোর অন্তত ১০ হাজার মানুষ।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শরীফ আহমদ বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাতটা থেকে আজ ভোর সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত বোমা ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। সাবরাং ও নয়াপাড়ার বিপরীতে নাফ নদীর ওপারে বলিবাজারে সবচেয়ে বেশি বিস্ফোরণ ঘটছে। সেখানকার আকাশে আগুনের ফুলকি ও কালো ধোঁয়া দেখা গেছে।
ওপারের গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়ার আতঙ্কে আছে হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়ার শতাধিক রাখাইন পরিবার। গ্রামের কয়েকজন বলেন, নির্ঘুম রাত কেটেছে তাঁদের। রাখাইনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে তাঁদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে।
এ পর্যন্ত টেকনাফ সীমানাতে ওপারের গুলি কিংবা মর্টার শেল এসে পড়েনি জানিয়ে হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, আরাকান আর্মি মংডু শহর তিন দিক থেকে ঘিরে হামলা চালাচ্ছে। তাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। বলিবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চললেও বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে না।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ ভোর পাঁচটা পর্যন্ত মংডুর আশপাশের কয়েকটি গ্রামে ২০-৩০টি মর্টার শেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে। তাতে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, কুলালপাড়া, ডেইলপাড়াতে কম্পন দেখা দেয়। আগের তিন রাতেও কম্পন অনুভূত হয়।
তবে কক্সবাজারের উখিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সেখানকার লোকজন চার দিন ধরে ওপারের গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শুনতে পাচ্ছেন না।