আইন-আদালতচট্টগ্রাম

তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতিতে হত্যা মামলায় সব আসামি খালাস

তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার আলোচিত প্রবাসী ইউসুফ আলী হত্যা মামলার ১২ আসামির সবাই খালাস পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী এই রায় দেন।

খালাস পাওয়া ১২ আসামি হলেন আজগর আলী, মো. টিপু, মো. মামুন, আলী আকবর, মাহবুবুল আলম, সাগর খান, মো. মোমিন, মো. আলমগীর, আয়ুব আলী, মোহসিনুল হক, আবুল তালেব, আবু বক্কর ও নেজাম উদ্দিন।

এদের মধ্যে নেজাম ছাড়া ১১ জন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর রাঙ্গুনিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাজানগর ইউনিয়নে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আবু তৈয়ব তালুকদার ও আজগর আলী। নির্বাচনে আজগর আলী পরাজিত হয়ে আবু তৈয়বের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। কয়েক দফা তার উপর হামলাও চালান। ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারী রাণীরহাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে আবু তৈয়বের ভাই প্রবাসী মোহাম্মদ ইউসুফ আলীকে কুপিয়ে জখম করে আজগর আলীর অনুসারীরা। ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউসুফের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আজগর আলীসহ ১২ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। রাঙ্গুনিয়া থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) খান নুরুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলি অশোক কুমার দাশ বলেন, অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা রাঙ্গুনিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) খান নুরুল ইসলামকে দায়ী করেছেন। এই ধরনের কর্মকর্তা পুলিশ বিভাগের কলঙ্ক উল্লেখ করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও নির্দেশ দেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, আমরা ১৬ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছিলাম। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা সবাই নিহতের পরিবারের। কিছু প্রত্যক্ষদর্শী থাকলেও তারা সাক্ষী হননি ভয়ে। কেউ আবার দেশের বাইরে চলে গেছেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমি বলব, যারা খালাস পেয়েছেন, তারাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।

আসামিপক্ষের আইনজীবী উজ্জ্বল সরকার বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে যথেষ্ট গাফেলতি ও পক্ষপাতের পরিচয় দিয়েছেন। যে জব্দ তালিকা আদালতে উপস্থাপন করেছেন, এর সঙ্গে সাক্ষ্যে উনার বক্তব্যের কোনো মিল ছিল না। ঘটনাস্থলে হাজির হওয়া এবং জব্দ তালিকা তৈরির সময়ে গরমিল পাওয়া যায়। আমরা আদালতে সেটা চ্যালেঞ্জ করেছি যে, তিনি একটি বানোয়াট জব্দ তালিকা দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *