আন্তর্জাতিক

তাজিকিস্তানে হিজাব নিষিদ্ধ, বাতিল ঈদের ছুটিও

হিজাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিল পাস করেছে মধ্য এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত দেশ এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্যতম অঙ্গরাজ্য তাজিকিস্তানের পার্লামেন্ট। নারীদের হিজাব নিষিদ্ধের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দুই ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহায় স্কুল-কলেজ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাতিলের বিষয়টিও রয়েছে বিলটিতে।

গত বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ মজলিশি মিলিতে পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটে বিলটি পাস হয়। এর আগে গত ৮ মে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ মজলিশি নামোইয়ানদাগনে পাস হয়েছিল বিলটি। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের বিলটি পাসের পর এক মজলিশি মিলির প্রেস সেন্টার থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হিজাব বা এই জাতীয় মস্তকাবরণর পরিধানের সংস্কৃতি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি হয়েছে। এটি তাজিকিস্তানের নিজস্ব সংস্কৃতি নয়। তা ছাড়া এই পোশাকটির সঙ্গে কট্টরপন্থার সম্পর্ক রয়েছে।’

তাজিকিস্তানের জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশ মুসলিম। হিজাবকে ‘বিজাতীয় পোশাক’ অভিহিত করে দেশটির সরকার এটি নিষিদ্ধ করেছে। এই আইন ভঙ্গকারীদের জন্য ৬৫ হাজার তাজিক সোমনি জরিমানার বিধান করা হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় যা ৫ লক্ষাধিক। হিজাবের পাশাপাশি দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমন ঈদের দিনের ‘ঈদি’ প্রথার ওপরও কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

২০০৭ সাল থেকে হিজাব, ইসলামি ও পশ্চিমা পোশাকের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান শুরু হয় তাজিকিস্তানে। ওই বছর তাজিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামিক পোশাক এবং পশ্চিমা ধাঁচের মিনিস্কার্ট উভয়ই নিষিদ্ধ করে। পরে সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে এটি কার্যকর করা হয়। এর পরের বছরগুলোতে হিজাবের ওপর একপ্রকার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা কাজ করছিল দেশটিতে। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি পর্যন্ত করেছিলেন।

মূলত তাজিকিস্তানের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও পোষাকরীতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালে তাজিকিস্তানের জাতীয় দিবসে সরকারের পক্ষ থেকে দেশটির নারীদের মোবাইলে হিজাব এবং পশ্চিমা পোশাক পরিহার করে তাজিকিস্তানের নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পরার আহ্বানও জানানো হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *