রাজনীতি

দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কে কত বড় নেতা আমলে নিচ্ছেন না তারেক রহমান

দলের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তিনি কোনো ছাড় দেবেন না। যত বড় নেতাই হোন, তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। পৃথক দুটি ঘটনার বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকনের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

আলোচিত শিল্প গ্রুপ এস আলমের গাড়িতে চড়ে নিজ এলাকা কক্সবাজারে সংবর্ধনা নেওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এস আলমের ১৪টি গাড়ি সরিয়ে দেওয়ার সহযোগিতার অভিযোগে এক দিন আগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে তিন নেতার পদ স্থগিত করা হয়। এর আগে গত রবিবার রাতে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফখরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল, চাঁদাবাজি এবং সরকারদলীয় নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের যোগসাজশের কারণে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

দলীয় সূত্র জানায়, শিল্প গ্রুপ এস আলমের গাড়িতে চড়ে কক্সবাজারে নিজ নির্বাচনী এলাকায় সংবর্ধনা নিতে যাওয়ার বিষয়ে সালাহউদ্দিনকে নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে তা নিয়ে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তার এই কাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করছে দলের উচ্চমহল। গত রবিবার রাতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেকে সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে স্কাইপিতে কথা বলে তারেক রহমান তার অসন্তুষ্টির কথা জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের দুজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা একটি জাতীয় গণমাধ্যমকে জানান, দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এতটাই কঠোর হয়েছেন যে কে কত বড় নেতা বা তার কতটা ঘনিষ্ঠ, সে বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না তিনি। তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সালাহউদ্দিন আহমেদকে শোকজ করার মধ্য দিয়ে তিনি এ কঠোর বার্তা দিয়েছেন।

বিএনপি সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর নানা অভিযোগে এখন পর্যন্ত প্রায় শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার এবং পদ স্থগিত করা হয়েছে। শাস্তি দেওয়া নেতাদের বেশির ভাগই হচ্ছেন ঢাকা মহানগর, বগুড়া, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরিশাল, পঞ্চগড়, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট ও লক্ষ্মীপুর জেলার। গত কয়েক দিনে দলের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় আরো কঠোর হয়েছে দল।

এত দিন অপেক্ষাকৃত জুনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এখন জ্যেষ্ঠ নেতাদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে পদাবনতি করে নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে। পুকুর দখলের অভিযোগে বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিনের পদ স্থগিত করা হয়। ফরিদপুরে দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় শামা ওবায়েদের দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শহিদুল ইসলাম বাবুলের কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক পদ স্থগিত করা হয়েছে।

বিতর্কিত ডায়মন্ড ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সঙ্গে বৈঠক করায় গত রবিবার শোকজ করা হয়েছে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *