ধর্ম

দুধ মা হালিমাকে যেভাবে সম্মান করতেন প্রিয়নবী সা.

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের আগেই তার বাবা ইন্তেকাল করেন। জন্মের পর মায়ের কোলে ছিলেন খুব অল্প সময়। কারণ, তৎকালীন অভিজাত আরব সমাজের শিশুদের কোলাহলমুক্ত গ্রামীণ পরিবেশে দুধ মায়ের কাছে রাখার প্রচলন ছিল।

সামাজিক প্রথা অনুযায়ী একেবারে শিশু বয়সে মুহাম্মদ সা.-এর জন্য দুধ মায়ের খোঁজ করা হয়। শিশু মুহাম্মদ সা.-এর দুধ মা হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন বনু সাকিফ গোত্রের হালিমা সাদিয়া।

তার কাছে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত ছিলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তবে এর মাঝে দুই বছর পর মুহাম্মদ সা.-কে কিছুদিনের জন্য মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন হালিমা সাদিয়া।

কিন্তু মক্কার আবহাওয়া তখন অনেক খারাপ ছিল, মহামারী ছড়িয়ে পড়েছিল সবখানে। তাই মা আমিনা ও আত্মীয়গণ তাঁকে আরও কিছুদিন হালিমার কাছে রাখা নিরাপদ মনে করেছিলেন।

পাঁচ বছর বয়সের পর শিশু মুহাম্মদ সা.-কে মা আমেনার কাছে একবারে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দুধ মা হালিমা। তবে এর কয়েক বছর পর মা, দাদা এবং পরিণত বয়সে একান্ত আপনজন চাচাকে হারান তিনি।

একে একে সব আপনজনকে হারালেও দুধ মা হালিমা বেঁচে ছিলেন দীর্ঘদিন। হালিমা নিজের চোখে দেখেছেন তাঁর দুধ খাওয়া শিশুটি আরবজাতির অবিসংবাদিত নেতা ও ইনসানিয়্যাতের রাহবার হয়েছেন। তিনিই হয়েছেন রাহমাতুল্লিল আলামিন।

হালিমা সাদিয়া নবী হিসেবে মুহাম্মদ সা. ও তাঁর উপর অবতীর্ণ মহাগ্রন্থের প্রতি ঈমান এনেছিলেন।

রাসূল সা. দুধ মা হালিমাকে অনেক সম্মান করতেন। তাকে বসার জন্য নিজের চাদর বিছিয়ে দিতেন।

একদিন হালিমা সাদিয়া হাজির হলেন বিশ্বনবী সা.-এর সামনে। যেইমাত্র নবীজি সা. দুধমাকে দেখলেন, আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন। ভক্তি ও শ্রদ্ধায় বলতে লাগলেন— উম্মী উম্মী (আমার মা, আমার মা)।

মহানবী সা. নিজের গায়ের চাদর খুলে বিছিয়ে দিলেন দুধ মায়ের বসার জন্য। তাঁর আগমনে চূড়ান্ত সম্মান ও মর্যাদার প্রকাশ ঘটালেন। উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম বিস্মিত চোখে শুধু তাকিয়ে রইলেন।

(সূত্র: সীরাতে ইবনে হিশাম, নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবন)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *