চট্টগ্রাম

দুবাই পালানোর সময় ‘ভিআইপি’ চোর তৌহিদ গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও গরু চুরির ঘটনার মূল হোতা তৌহিদ (৩১) কে দুবাই পালিয়ে যাবার সময় হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

২৭ মে (সোমবার) বিকেলে তাকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইমিগ্রেশন থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। গ্রেপ্তার তৌহিদ কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের কারিয়াঘো গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইন্সপেক্টর মো. দিদারুল ফেরদৌস।

জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারিতে সংঘটিত বোয়ালখালীর শাকপুরা এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের বৌদ্ধ বিহারের মূর্তিতে থাকা স্বর্ণের চেইন ও রকেট চুরির ঘটনায় করা ক্লু-লেস মামলায় এই ভিআইপি চোরকে পিবিআই পুলিশ গ্রেপ্তার করেন।

এর আগেও গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাতে বোয়ালখালীর পশ্চিম শাকপুরার গ্রামের শাহ আমানত ভবনে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

এ সময় ভবনের ৮টি ফ্ল্যাট থেকে ১৩ টি মোবাইল, ৭ ভরি স্বর্ণ, নগদ টাকা ও জামা কাপড় লুট করে ডাকাত দল।

এরপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কর্ণফুলীর জুলধা ইউনিয়নের দুধ বেপারী মো. নাজেমের একতলা বাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে ডাকাতেরা পরিবারের সবাইকে হাত পা বেঁধে এক রুমে আটকে রেখে প্রায় ৩ ভরি স্বর্ণ, দুই লক্ষ নগদ টাকা, দুটি মোবাইল ফোনসহ কাপড় চোপড় লুট করে নিয়ে যান। থানা পুলিশ এ মামলারও কোন কূল কিনারা করতে না পারায় ডিবির কাছে চলে যায়।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার তৌহিদ চকরিয়ার গরু চোর নইব্যা চোরের অন্যতম সদস্য। নইব্যা চোরের মতো তৌহিদ নিজেও চকরিয়ায় বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন। যার পেশা গরু চুরি আর ডাকাতি করা। এ ছাড়া দৃশ্যমান তাদের কোন ব্যবসা নেই।

আরো তথ্য মিলে, চট্টগ্রামের দক্ষিণে সাতকানিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, কর্ণফুলী ও বোয়ালখালী এলাকাতে ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত অন্তত ১০টি পুলিশ সেঁজে ডাকাতি ও গরু চুরির ঘটনা ঘটে। সে সব ঘটনার মূলহোতা এই ভিআইপি চোর তৌহিদ। কিন্তু অনেক ঘটনার কোন মামলায় হয়নি।

জানা যায়, এই চক্রের সদস্যরা গ্রাম ছাড়িয়ে শহরেও মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার ও সিট বিহীন নোহা গাড়ি নিয়ে চুরি ও ডাকাতি করতেন। কোন ঘটনায় বাঁধা পেলে প্রকাশ্যে ফাঁকা গুলি চালাতেন।

এদের রয়েছে ২০-২৫ জনের গ্যাং। গরু চুরি আর ডাকাতি করেই এরা কোটিপতি সকলেই। বেশির ভাগ গ্যাংয়ের ডাকাত চকরিয়া এলাকার। পুরো চকরিয়ায় এদের বলয়।

পুলিশের অনুসন্ধানে আরো তথ্য মিলে, চকরিয়ার কোনাখালীর বাসিন্দা নোমানের নেতৃত্বে একটি ‘ভিআইপি’ চোর চক্র সক্রিয়। এই গ্রুপের ৪০ সদস্যের ব্যাপারে তথ্য মেলে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, ‘প্রশাসনের লোক পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি ও চুরির ঘটনায় মামলার সূত্র ধরে পিবিআই পুলিশ কাজ করছেন। শিগগরই চক্রের অন্য সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *