চট্টগ্রামনগরজুড়ে

দেশটা দ্বিতীয় নীরব মুক্তিযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে

উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের প্রয়াত সভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদজায়া ও শহীদভগ্নি বেগম মুশতারী শফীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর চেরাগী পাহাড়ের বৈঠকখানা মিলনায়তনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চট্টগ্রাম জেলা সংসদ এ স্মরণসভা আয়োজন করে।

স্মরণসভায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, বেগম মুশতারি শফী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের জন্য আমৃত্যু লড়াই করে গেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনে সামনের কাতারে ছিলেন। মুশতারী আপা অতীতেও আমাদের আলো দেখিয়েছেন। তার সে আদর্শ ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। মুশতারী আপার শেষ ইচ্ছা ছিল চট্টগ্রামে একটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর করার। সে ইচ্ছা পূরণে রাষ্ট্র এগিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হবে, সরকার হবে, পার্লামেন্ট হবে। কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছে- দেশ নীরব সিভিল ওয়ারের দিকে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন- আমি স্বাধীনতা বিরোধীদের আর কখনও ক্ষমতায় আসতে দেব না। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার পক্ষে ৬৫ ভাগ ভোট পড়েছিল বাঙালির। কিন্তু ৩৫ ভাগ বাংলা ভাষাভাষির মানুষ ছয় দফার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল। তারাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগি হিসেবে বাংলাদেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়েছিল। তারা কিন্তু এটা এখনও অব্যহত রেখেছে’।

তিনি আরও বলেন, ‘ওই ৩৫ শতাংশ যে ভোট পড়েছিল জামায়াত-মুসলিম লীগ-নেজামে ইসলামী পার্টি তাদের উত্তরসূরি আজ বিরোধী শিবির। এখন রাজনীতির এ সংকটে ভারত ও রাশিয়া একদিকে অবস্থান নিয়েছে। আর আমেরিকা আরেকদিকে অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচনের পরে আমেরিকা চেষ্টা করবে এখন যারা বিরোধী তাদের মধ্য থেকে তালেবানি রাজনীতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ২০২৯ সালের নির্বাচন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্য হবে না। আওয়ামী লীগ এবং তালেবানের মধ্যে হবে। যখন আমি যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ছিলাম বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ খুব গভীরভাবে দেখতে পাই। আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে দেশটা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের দিকে যাবে। সাইলেন্ট সিভিল ওয়ারের দিকে যাবে। এটা কন্টিনিউ করবে। সেটা ২০২৯ সালের মধ্যে হবে। তালেবানি শক্তি ক্ষমতায় আসবে কি আসবে না সেটা পরের কথা’।

উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি ডা. চন্দন দাশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা শীলা দাশগুপ্তের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন নারীনেত্রী নুরজাহান খান, বোধন আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি আব্দুল হালিম দোভাষ, সাংবাদিক-প্রাবন্ধিক সুভাষ দে, শহীদজায়ার বড় সন্তান ফারজানা নজরুল, জামাতা সাংবাদিক-গবেষক আবদুল্লাহ জাফর সমীর ও ছেলে মেহরাজ শফী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *