চট্টগ্রাম

দেশি পেঁয়াজে ঠাসা আড়ত

দাম বাড়ার পর তিনদিনেই কমল পেঁয়াজের দাম। মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষের পথে। সবশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি একলাফে ১০-১৫ টাকা বেড়ে ১১০ টাকায় ঠেকে বাজার। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তিনদিন পরই কমল দাম। মঙ্গলবার সকালে ভোগ্যপণ্যের বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা গেল দেশি পেঁয়াজে ঠাসা সবকটি আড়ত।

দামের ওঠানামা নিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে যায়। আবার পেঁয়াজ আসার কারণে দাম কমে আগের দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এ দামও কতদিন স্থায়ী থাকে বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে দাম বাড়া-কমা। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে আর না বাড়লে বেড়ে যাবে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলে দাম একদম কমে যাবে।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের শেষের দিক থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এরপর দাম ওঠানামা করছে। একদিন বাড়ে তো একদিন কমে। মাঝেমধ্যে চোরাইপথে আসা ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে ঢুকেছে বলে দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে যা এসেছে তা চাহিদার তুলনায় নগন্য। এখন খাতুনগঞ্জে ভারতীয় পেঁয়াজ মোটেও নেই।

দেশের প্রধান পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে। এদিন ১০০ টাকায় বিক্রি করা হলেও সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) থেকে মানভেদে প্রতিকেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মঙ্গলবার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দেখা গেছে, সবকটি আড়ত মুড়িকাটা পেঁয়াজে ভরপুর। গুদামের বাইরেও বস্তায় বস্তায় পেঁয়াজের স্তূপ।

এক পাইকারি ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশি পেঁয়াজ ঢুকেছে খাতুনগঞ্জে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ আসেনি। দেশি পেঁয়াজ আসায় দাম আবার কমেছে। বর্তমানে মানভেদে প্রতিকেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মেহেরপুরের পেঁয়াজ পাইকারি ৭০ টাকা কেজি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষের পথে। তাই দামের উঠানামা হচ্ছে। মার্চের প্রথম দিকে নতুন পেঁয়াজের একটি চালান আসতে পারে। ওই সময় আরেকটু দাম কমতে পারে। তবে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের দাম এভাবে লাফ দিয়েছে। অন্যথায় দাম হাতের নাগালে থাকত।

খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস সিভয়েস২৪-কে বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজের দাম রবিবার থেকে কমে গেছে। শনিবার ১১০ টাকায় বিক্রি করা হলেও রবিবার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। আবার সোমবার বিক্রি হয় ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। তবে সরবরাহ কম। মার্চ মাসে দেশি পেঁয়াজের আরেকটি চালান উঠবে। ওই সময় দাম আরও কমে যাবে।’

এদিকে, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমার প্রভাব পড়েছে খুচরায়ও। বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কোনো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে খুচরায়ও বাড়ে। আবার সেখানে দাম কমলে আমাদেরও কমে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ‘সোমবার থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ মানভেদে প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারি পর্যায়ে দাম কমে গেছে তাই আমরাও কম দামে বিক্রি করছি। পাইকারি হিসাবে যদি বেশি দামে কিনি তাহলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। আর কম দামে কিনলে কম দামেই বিক্রি করতে পারি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *