দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাক
মানিকগঞ্জ প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) ইনস্ট্রাক্টর রবিউল আওয়ালের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে পরকীয়ার কারণে সংসার ভাঙার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী ও এক সন্তানের জননী পাপিয়া আক্তার।
লিখিত বক্তব্যে পাপিয়া আক্তার জানান, স্বামী ও কন্যা নিয়ে বেশ ভালোই চলছিল তার সংসার। ওই সময় স্বামীর কর্মস্থল ছিল ফেনী। তাদের সুখের সংসারে হাঠাৎ কালো মেঘ হয়ে আসে ফেনীর ফুলগাজী পশ্চিম বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আসলিমা আক্তার। ২০২০ সালে ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কেলেঙ্কারির ঘটনায় ফেনী থেকে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় রবিউল আউয়ালকে বদলিও করা হয়। পটিয়াতে যাওয়ার পরও ওই নারীর সঙ্গে তিনি সম্পর্ক চালিয়ে যায়। স্বামীকে সংশোধনের চেষ্টা করেন স্ত্রী। স্বামীকে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় শুরু হয় তার ওপর নির্যাতন। এরপর তিনি স্বামীর অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে ওই নারীর কাছ থেকে একটি মুচলেকা নেওয়ার হয় যাতে তারা আর কোনো সম্পর্কে না জড়ান। এরপর ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তার স্বামীকে মানিকগঞ্জ পিটিআইতে বদলি করা হয়। মানিকগঞ্জ আসার পর থেকে তার স্বামী তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। এর মধ্যে তার স্বামী তাকে ২০২৩ সালে নভেম্বর মাসে তালাক দেন। এ ঘটনায় তিনি মানিকগঞ্জ সদর থানায় নারী নির্যাতনের অভিযোগ দেন। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় তাদের পুনরায় বিয়ে হয়। কিন্তু পুনরায় বিয়ে হলেও তার স্বামী গোপনে ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি জানান, তার স্বামী ও ওই নারীর মধ্যে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানার পর থেকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতির জন্য তাকে চাপ দিতে থাকেন। ২০২২ সালের ২০ আগস্ট দ্বিতীয় বিয়ের জন্য একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও করতে বলেন তার স্বামী। দ্বিতীয় বিয়ের অনুমিত না দেওয়ায় তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন স্বামী এবং তার পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোনে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। সেই সঙ্গে ওই নারীকে গোপনে তিনি বিয়ে করেন। এখন দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দিলে তার চাকরি চলে যাবে। এর জন্য তিনি আগের তারিখ দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি চাচ্ছেন। দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়াতে তার এবং একমাত্র মেয়ের ভরণপোষণও দিচ্ছেন না।
পাপিয়া আক্তার বলেন, আমার স্বামী একজন নারী লোভী। পিটিআইতে চাকরি করার কারণে অনেক শিক্ষিকার সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। এখন আমার একটাই দাবি আমার সন্তান যেন তার বাবা ও পরিবার না হারায়।
এ ব্যাপারে পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর রবিউল আওয়াল বলেন, পাপিয়া আক্তার এখন আমার স্ত্রী নয়। সে অবাধ্য হওয়ার কারণে গত মাসে তাকে তালাক দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আর দ্বিতীয় বিয়ের প্রয়োজন নেই। পাপিয়া একজন সন্দেহপ্রবণ নারী। তিনি অফিসে এসে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। এ ধরনের মানুষের সঙ্গে আর যাই হোক সংসার করা যায় না। তবে তিনি দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং ওই নারীকে বিয়ে করেননি বলে দাবি করেন।