জাতীয়

ধেয়ে আসছে রেমাল, ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি আজ শনিবার বিকেলের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘রেমাল’।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাসের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ারও আশঙ্কা আছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তবে এটি জোয়ার-ভাটার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

আজ শনিবার সচিবালয়ে ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতির জরুরি সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তা আজ দিবাগত ভোররাত থেকে সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এতে সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকা আক্রান্ত হতে পারে। প্লাবিত হতে পারে ব্যাপক এলাকা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ শনিবার রাত ১২টার পর থেকে সিরিয়াস পর্যায়ে যেতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও চার হাজার উপকূলীয় আশ্রয়কেন্দ্র। ওয়ারলেসের মাধ্যমে সরাসরি ১৭৪টি মাঠ কার্যালয়কে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ডও প্রস্তুত থাকবে বলে দাবি করেছেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।’ তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এনডিআরসিসি খোলা থাকবে ২৪ ঘণ্টা।

আগামীকাল রোববার ভোর থেকে ঝড় আঘাত হানতে পারে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমান জানান, আজ রাতের মধ্যেই উপকূলীয় অঞ্চলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়া হবে।

এদিকে, আজ শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (০৬) এ বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি আজ শনিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থান করা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *