চট্টগ্রাম

নতুন হালখাতায় নতুন স্বপ্ন

বাংলা নববর্ষের অনিবার্য আয়োজন ‘শুভ হালখাতা উৎসব’। দেশে ভোগ্যপণ্যের বড় পাইকারি বিপণিকেন্দ্র খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই, আসাদগঞ্জ, টেরিবাজার, মাঝিরঘাট, পাহাড়তলীসহ বিভিন্ন স্থানের আড়তদার, পাইকার, স্বর্ণকাররা নতুন হালখাতা কিনছেন।

১৪ এপ্রিল হালখাতা উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

নগরের বকশিরহাট মোড়ে নতুন খাতার জন্য প্রসিদ্ধ কর্ণফুলী আর্ট অ্যান্ড বাইন্ডিং হাউস।

ঈদের বেচাকেনার মৌসুম থেকেই সেখানে হালখাতার ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মালিক পঙ্কজ দাশ জানান, ১২৫ বছরের প্রাচীন দোকানটির প্রতিষ্ঠাতা তার বাবা কৃষ্ণকুমার দাশ।

তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব খাতার কারখানায় মানসম্মত খাতা তৈরি করি আমরা। মানের ক্ষেত্রে কোনো আপস নেই। প্রিন্ট, বাঁধাই, কাগজের মানের ওপর খাতার দাম নির্ভর করে। বাবুরহাট, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, মাঝিরঘাট থেকে শুরু করে সারা দেশে যায় আমাদের খাতা।

খাতুনগঞ্জের কেসএস এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি সমর তালুকদার ও সুমন মজুমদার এসেছিলেন হালখাতা কিনতে। তারা জানান, ১২-১৩ বছর এখান থেকেই খাতা কিনছেন। তাদের বাইন্ডিং ভালো। পৃষ্ঠার পুরুত্ব ও সংখ্যা সঠিক থাকে। দামও তুলনামূলক কম।

৩৬০ চান্দমিয়া লেনের এসবি বাইন্ডিং হাউসে খাতা কিনতে আসেন খাতুনগঞ্জের দ্বীন সিন্ডিকেটের প্রদীপ সরকার। তিনি বলেন, বিভিন্ন আকারের ৬টি খাতা কিনতে হলো। ১৪ এপ্রিল হালখাতা উৎসব করবো আমরা।

৩৭ নম্বর বক্সিরহাটের নিউ খাতাঘরে পাওয়া যাচ্ছে লেজার, ক্যাশবুক, স্টক বুক, রেজিস্টার, ডে বুক, জাবেদা, খতিয়ান ইত্যাদি। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক দীপক রঞ্জন ঘোষ। তার বাবা স্বদেশ রঞ্জন ঘোষের কাছে খাতা বাঁধার কাজ শিখেছেন। ৪২ বছর খাতার ব্যবসা করছেন। তিনি জানান, প্রথম যখন দোকানে এসেছিলাম এক রিম কাগজ ৬০০ টাকায় কিনেছিলাম ৪২ বছর আগে। এখন সেই কাগজ ৭ হাজার টাকা। আগের তুলনায় কম বেচাকেনা। দুইটা উৎসবের বন্ধ একসঙ্গে এবার। ডিজিটাল নানা ডিভাইস আসায় হালখাতা কমে গেছে৷ কিন্তু টিকে আছে।

তিনি বলেন, গত নভেম্বরে সকাল ৯টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত খাতা তৈরি করেছি। একটি খাতা বাঁধাইয়ে ১৫ বার হাত দিতে হয়। তারপর বিক্রির উপযোগী হয়। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা যায় নিউ খাতাঘরের খাতা।

দীপক রঞ্জনের জামাতা জানান, কাগজের রিম ৩০০-৪০০ টাকা বেড়েছে। খাতা বাঁধাইয়ের গজ কাপড়ের দাম বেড়েছে। কিন্তু খাতার দাম তেমন বাড়াইনি। সীমিত লাভেও ব্যবসা হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *