নির্বাচন ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে আসছে অস্ত্র-বিস্ফোরক
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আসছে। মূলহোতারা গ্রেপ্তার না হওয়ায় বন্ধ করা যাচ্ছে না এসব চোরাচালান। সর্বশেষ গত ১৩ দিনেই সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র, ভারী ও হালকা অস্ত্রের আড়াইশ গুলি এবং ১৪ কেজি বিস্ফোরক জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শুধু তাই নয়, জব্দ করা হয়েছে ৪১টি তাজা ককটেলও। আর অস্ত্র ও গুলির এসব বড় চালান কারা দেশে আনছে বা মজুদ করছে, তা এখনও জানতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একদিকে বিস্ফোরক চোরাচালান বাড়ছে অন্যদিকে হামলা চালানো হচ্ছে জেলা প্রশাসন, নির্বাচন অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর রানিহাটি থেকে পাঁচ ককটেল উদ্ধার হয়। একই দিন শিবগঞ্জের আজমতপুর সীমান্তে মোটরসাইকেলে আগ্নেয়াস্ত্র পাচারের সময় পিস্তল, গুলি ও ম্যাগজিনসহ দুজনকে আটক করা হয়। ১৫ নভেম্বর শিবগঞ্জ সীমান্তে একটি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ৩৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই সদর উপজেলার মহারাজপুর থেকে তিন কেজি ৪২০ গ্রাম বিস্ফোরকসহ একজনকে আটক করা হয়।
২৯ ডিসেম্বর রাতে শিবগঞ্জের লাভাঙ্গার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৪১টি তাজা ককটেল জব্দ করা হয়। ৩১ ডিসেম্বর শিবগঞ্জ সীমান্তে পরিত্যক্ত অবস্থায় দুটি বস্তায় ১২ কেজি বিস্ফোরক পাওয়া যায়। সর্বশেষ ৩ জানুয়ারি শিবগঞ্জের মনাকষায় একটি বাড়িতে রাখা ককটেলের একটি বিস্ফোরিত হলে একটি শিশু আহত হয়।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দেওয়া তথ্যে জানা যায়, গত ১১ মাসে ২০টি পিস্তল, ৩৭৩ রাউন্ড গুলি, ৩২ ম্যাগজিন এবং মেশিনগানের ৫১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হলেও নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর মাত্র ১৩ দিনে সাতটি বিদেশি পিস্তল এবং বিপুল পরিমাণ গুলি জব্দ করা হয়। এসময়ে মেশিনগানের ৫১ রাউন্ড গুলি জব্দ হওয়ায় খোদ বিজিবির কর্মকর্তারাও চিন্তিত। অন্যদিকে এসব ঘটনায় শুধু এক নারী আটক হলেও এখনও এসব অস্ত্রের চালান কারা কোথা থেকে আনা হয়েছে, তা চিহ্নিত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিশেষ করে গত ২১ ডিসেম্বর দুপুরে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া ও রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান পিএসসি উদ্বেগের সঙ্গে জানান, এ ধরনের ভারী অস্ত্রের গুলি উদ্ধারের পর সীমান্তে আরও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। এ ধরনের গুলি শুধু বড় ধরনের নাশকতার উদ্দেশেই আনা হয়েছে। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাইরে এসব অস্ত্র সহজলভ্য হলে দেশের জন্য বিপজ্জনক বলেও মন্তব্য করেন।