নৌকা বিহীন দুই আসনেও নৌকা
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) ও চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী আংশিক) আসনে ‘জোটবন্ধু’ আওয়ামী লীগ নৌকা উঠিয়ে নিলেও ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির জ্বালা হয়ে আছেন ‘আওয়ামী’ স্বতন্ত্ররা। আওয়ামী ‘সঙ্গ’ না পাওয়ায় ভোটের হিসাব-নিকাশে জয়ের ‘নিশ্চয়তা’ পাচ্ছেন না তাঁরা। তবে, আওয়ামী স্বতন্ত্র নাকি লাঙল কে হাসছেন শেষ হাসি— তাঁর ‘ফাইনাল’ হিসাব হবে রবিবার সন্ধ্যায়।
লাঙ্গলের ‘বিষফোঁড়া’ স্বতন্ত্র। নৌকার কোনো প্রার্থী না থাকায় খুব সহজেই ‘ভোটযুদ্ধে’ জয়ের স্বাদ জুটছে না জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থীর। ভোটের মাঠে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। তবে তাদের ‘বিষফোঁড়া’ আওয়ামী স্বতন্ত্র। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির আনিস ‘পাক্কা’ খেলোয়াড় হলেও প্রথমবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী (কেটলি) ‘নাছোড়বান্দা’। তিনিও ভোটযুদ্ধে নিজেকে জয়ী করতে চান।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ এ আসনে প্রথমবারের মতো নির্বাচন করছেন। আর সেই আসনে ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী হিসেবে আছেন নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম। তিনি নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী (কেটলি) হিসেবে নির্বাচন করছেন। এর আগে, তিনি সিডিএর চেয়ারম্যান হিসেবে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তবে এবার তিনি সংসদ নির্বাচনে জয়ী হতে মরিয়া। এ আসনে শুধু যে ওই দুই প্রার্থী নয়; আরেক আওয়ামী স্বতন্ত্র প্রার্থীও তাদের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে। তিনি নগর আওয়ামী লীগের সদস্য সাবেক কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী (ফুলকপি)।
নৌকা না থাকায় ‘ছন্নছাড়া’ আ. লীগের নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে নৌকার প্রার্থী না থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তিনভাগে বিভক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ, কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম আবার কেউ বিজয় কুমার চৌধুরীর পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে নৌকার প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আলাদা প্রার্থীকে সমর্থন দেন। বিভক্ত হয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস গণি চৌধুরী, সৈয়দ মনজুরুল আলম ও পরিবহন নেতা মঞ্জুরুল আলম মঞ্জুকে। তবে ৭০ শতাংশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সমর্থন স্বতন্ত্র শাহজাহানকে। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের রয়েছে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক। আবার অনেকে প্রকাশ্যে মাঠে না থাকলে নীরবে কাজ করেছেন শাহজাহানের পক্ষে।
দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামকে আর মাঠে দেখা যায়নি। ভাগাভাগিতে বারংবার বলি হতে হয়েছে তাকে। দলীয় সিদ্ধান্তে সরে যেতে হলেও চাপা ক্ষোভ আছে। তাই লাঙ্গলের আনিসের পক্ষ হয়েও গণসংযোগে দেখা যায়নি সালামকে। অথচ গত মঙ্গলবারও ফটিকছড়ি আসনে নৌকার মাঝি খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে জেতাতে দিনভর অলিগলি চষে বেড়িয়েছেন এই নেতা। কিন্তু নিজ এলাকায় নিশ্চুপ এম এ সালাম। তবে স্থানীয় একাধিক নেতাকর্মী বলছেন, এম এ সালাম ভোটের মাঠে নিরব থাকলেও পরোক্ষ সমর্থন দিচ্ছেন শাহজাহানকে।