শিক্ষা

পড়াশোনার খরচ যোগাতে চা দোকান দিলো লিমা

কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও অর্থের অভাবে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু হাল ছাড়ছে না সাফল্য নিয়ে মাধ্যমিক পাস করা মোসাম্মৎ লিমা আক্তার।

সাংসারিক খরচের পাশাপাশি শিক্ষাজীবন চালিয়ে নেওয়ার জন্য সে শুরু করেছে অন্য এক লড়াই।

বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকার ফুটপাতে চায়ের দোকান দিয়েছে সে। আর মধুমতি চা কর্নার নামের ওই চায়ের দোকান থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে ভর্তির টাকা জোগাড়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিদিন ১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বিকেল ৩টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত খাবার ভ্যানের ওই ছোট্ট দোকানটি চালায় সে। যেখানে গরুর দুধের চায়ের পাশাপাশি বিক্রি করে, মালাই চা, আদা চা, লেবু চা, মাল্টা চা ও কফি।

শাকিল হাওলাদার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, লিমার পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে সবাই মুগ্ধ। সে মানুষের কাছে হাত না পেতে অর্থের জন্য কর্ম করছেন। যা তাকে সম্মানিতও করছে। লিমার কথা শুনে সবাই হতবাক হচ্ছেন, ওর মঙ্গল কামনা করে দোয়া করছেন।

তবে এ ধরনের মানুষের পাশে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আশার আহ্বান গ্রাহকদের।

নগরের চৌমাথা লেকের ফুটপাতের অন্য দোকানদাররা জানান, লিমার ভর্তি নিয়ে চিন্তিত তারা। গ্রাহকদের অন্য খাবারের পাশাপাশি তারা অনুরোধ করছেন লিমার দোকানের চা খাওয়ার জন্য।

আর লিমা জানান, ষাটোর্ধ্ব বাবা মজিবর রহমান চৌমাথা বাজারে নাইটগার্ডের কাজ করেন। এছাড়া মা সবজি বিক্রি করেন। ৩ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে লিমা চতুর্থ। বড় ভাই মাছ বিক্রির পেশায় জড়িত। ১৫ সদস্যের পরিবারে এমনিতেই অভাবের সংসার চলছে তাদের। আর বড় ভাই ও বাবা প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত। এমন অবস্থায় পরিবার ও নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে মাকে বলে একজনের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ধার নিয়ে দোকান শুরু করেছেন তিনি।

জানা গেছে, বর্তমানে সবকিছু ভালোভাবে চললে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হয় তার দোকানে।

এখন লিমার আবেদন তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে যেন কলেজ কর্তৃপক্ষ তার পাশে দাঁড়ায়।

২০২৩ সালে টিসিসি থেকে এসএসসি পাস করে লিমা। বর্তমানে অনলাইনে উচ্চমাধ্যমিকে আবেদন করে নগরের বেগম তফাজ্জেলে হোসেন মানিক মিয়া মহিলা কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া ভর্তির সুযোগ পেয়েছে বরিশাল পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *