পরিপূর্ণভাবে হিজাব না পরায় আফগান কিশোরীকে বেত্রাঘাত, বাবাকেও মারধর
অশোভন ও পরিপূর্ণভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বেশ কয়েকজন নারীকে আটক করে তালেবানের সদস্যরা। যারমধ্যে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীও ছিল।
শপিং সেন্টার, ক্লাস এবং ফুটপাতের দোকান থেকে তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়— তারা অন্যদের অশোভন হিজাব পরিধানে উৎসাহিত করছে এবং মুখে মেকাপ দিচ্ছে।
ল্যালি (ছদ্মনাম) নামের এক ১৬ বছর বয়সী কিশোরীও ছিল সেই তালিকায়। তাকে এবং তার সহপাঠীদের একটি ইংরেজি ভাষার কোচিং থেকে আটক করা হয়। এই কিশোরী জানিয়েছে, ক্লাসের যে ছাত্রীরা তালেবান সদস্যদের সাথে তর্ক করেছিল এবং তাদের সঙ্গে যেতে চায়নি— তাদের মারধর করা হয়েছে। অপরদিকে তার পায়ে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। এমনকি পরবর্তীতে ‘নীতি-নৈতিকতাহীন মেয়েকে বড় করার’ অভিযোগে তার বাবাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে।
ল্যালি বলেছেন, ‘আমার পোশাক ছিল শালীন; এমনকি আমি একটি ফেস মাস্কও পরে ছিলাম। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমি মুখে মাস্ক পরে থাকি। কিন্তু তবুও তারা আমাকে মারধর করেছে। তারা দাবি করছিল আমার পোশাক অশালীন ছিল।’
এই কিশোরী জানিয়েছেন, তাকে দুইদিন আটকে রাখা হয়েছিল এবং ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করায় তালেবান সদস্যরা তাকে ‘কাফের’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
পরবর্তীতে এক মুরব্বির সহায়তায় তিনি ছাড়া পান। তবে তাকে শর্ত দেওয়া হয় হিজাব ছাড়া আর কখনো সে বের হতে পারবে না। এছাড়া তাকে ইংরেজি ভাষা শেখার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
তিনি বলেছেন, ‘২০২১ সালে যখন তালেবান ক্ষমতা দখল করে তখন আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমি কোচিংয়েও যেতে পারব না। এখন আমি বাড়িতে থাকা আর বিয়ে করা ছাড়া ভবিষ্যতের জন্য আর কিছু চিন্তা করতে পারব না।’
রিলস তৈরিতে স্ত্রীকে বাধা দেয়ার পর স্বামীর লাশ মিলল
‘ইংরেজি শিখতে যাওয়ায় আমার বাবাকে যে কতটা মারধর করা হয়েছে আমি দেখেছি। বাড়িতে ফেরার পর আমি বাবার সেই ছবি দেখেছি। আমি খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে আমি তাকে হারাব। এই ঘটনার পর পড়ার ক্ষেত্রে আমার আর কোনো ইচ্ছা নেই। আমি এ পরিস্থিতির সম্মুখীন আর হতে চাই না।’