কক্সবাজার

পলি জমে বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে মহেশখালী চ্যানেল

বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে পর্যটন শহর কক্সবাজার। এ নদীর মোহনায় মহেশখালী চ্যানেলের দিকে নদী ও সমুদ্রের একটি অংশ ভরাট করে সম্প্রসারণ হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এ নিয়ে আপত্তি জানালেও বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ফলে নদীতে পলি জমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এ নৌপথ।

নদীতীরের ৬১৮ মিটার অংশে পাইলিংয়ের প্রতিটি পিলারের মধ্যে দূরত্ব রাখা হয়েছে কেবল ২৫ মিটার। ফলে নদীর প্রকৃতি অনুযায়ী দখলকৃত এ অংশে ধীরে ধীরে পলি জমে চর পড়বে। এতে মহেশখালী চ্যানেলটির দিক পরিবর্তন হতে পারে কিংবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা।

উদ্বেগ প্রকাশ করে বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই না করে কিংবা মতামত না নিয়েই বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নদী মোহনায় পিয়ার তৈরি ও ভরাটের ফলে মহেশখালী চ্যানেল উত্তরে সোনাদিয়া অঞ্চলের দিকে সরে যেতে পারে। আর এভাবে দিক পরিবর্তন হলে ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হবে দক্ষিণাঞ্চলের নৌ-যোগাযোগ।

জানা গেছে, বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের শুরুতে নদীতীর ব্যবহার এবং প্রকল্প কাজ বাস্তবায়নে একটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি সরকারের কাছে অনুমতি চায় বেবিচক। এর পরিপ্রেক্ষিতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এর প্রায় দুই মাস পর ওই বছরের ২ মার্চ বিআইডব্লিউটিএকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়।

ত্রি-বিভাগীয় কমিটি করে প্রকল্প এলাকাটি সরজমিন পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২০২২ সালের ৩ জুলাই চট্টগ্রাম কার্যালয়কে নির্দেশ দেয় বিআইডব্লিউটিএ।

পরে বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক নয়ন শীলকে আহ্বায়ক এবং প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুরকৌশল) এএসএম আশরাফুজ্জামান ও যুগ্ম পরিচালক মো. সবুর খানকে কমিটির সদস্য করা হয়।

ওই কমিটি পরে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে দ্য পোর্ট অ্যাক্ট-১৯৬৬-এর ধারা ৫৪, ৫৫ ও ৫৮-এর আলোকে কক্সবাজার বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুকূলে ১ হাজার ১৬ শতাংশ তীরভূমিসহ ২২ হাজার ৬৪০ বর্গমিটার জায়গায় অস্থায়ী জেটি নির্মাণে শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেয়ার সুপারিশ করে। তাই প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি বিআইডব্লিউটিএর অনাপত্তির পাশাপাশি জমির ফি বাবদ ৭১ লাখ ২১ হাজার ৩৮১ টাকা এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আয়করসহ সর্বমোট ৮১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৮ টাকা পরিশোধে চিঠি দেয়া হয়। এ বিষয়ে একাধিক চিঠি দেয়া হলেও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর দাবি করা ফি পরিশোধ করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *