শিক্ষা

পানির নিচে ক্লাসরুম, হচ্ছে প্রাথমিকের পরীক্ষা

কুমিল্লার বরুড়ায় হাঁটু সমান পানি ভেঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। স্কুলমাঠ, রাস্তাঘাট তলিয়ে আছে বন্যার পানির নিচে। এ দুর্ভোগের মধ্যেও চলছে বরুড়ার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলার বন্যাকবলীত এলাকা গুলো ঘুরে দেখা যায় বরুড়ার উওর অঞ্চল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলেও এখনো রাস্তাঘাট পানির নিচে দক্ষিন অঞ্চল গুলোর।

এই অঞ্চলের বন্যার পানি খুব ধীরে ধীরে নিষ্কাশিত হচ্ছে, যা মানুষের জন্য আরও কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে স্কুলের মাঠ, স্কুলের যাওয়া আসার পথঘাট এখনো পানির নিচে সেখানে পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাচ্চাদের অভিভাবকরা।

জানা যায়, বরুড়ার দক্ষিন অঞ্চল লক্ষীপুর ইউনিয়নের ৮২নং চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিতসী রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন লক্ষীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, নলুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়,নোয়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ ওই ইউনিয়নের আরও অনেক গুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল মাঠে এখনো হাঁটু সমান পানি। এই সকল স্কুলের শিক্ষকরা স্কুলে যাতায়াত করেন কলা গাছের ভেলা বানিয়ে। এমন অবস্থায় পরীক্ষার্থীরা কীভাবে আসবে পরীক্ষা দিতে এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষকরাও।

চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন বলেন, ‘আমাদের স্কুল মাঠে এখনো পানি। আমাদের অফিস কক্ষে, ক্লাস রুমে পানি। তার মধ্যেই ২য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল প্রথম পরীক্ষা ছিল। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিজ দায়িত্বে স্কুলে নিয়ে এসেছে। বেশিরভাগ পরিক্ষার্থী আসতে পারিনি।

চিতসী রোড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের স্কুল মাঠে, স্কুলে আসার পথে এখনো অনেক পানি। এই গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হওয়াতে আমাদের স্কুলকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এখনো অনেক পরিবার এখানে আছে। এই অবস্থায় পরীক্ষার রুটিন প্রকাশিত হওয়াতে আমরা দ্রুত স্কুলের পাশেই মাদ্রাসায় পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমাদের স্কুল শ্রেণিকক্ষে এখনো পরীক্ষা নেওয়ার মত অবস্থা তৈরি হয়নি।

ফারজানা বেগম নামের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, পরীক্ষার কথা শুনে মেয়েকে নিয়ে স্কুলে আসি। স্কুলের পথে হাঁটু সমান পানি মেয়ের তো পুরো শরীর ভিজে গেছে। এই অবস্থায় কীভাবে স্যারেরা পরিক্ষা নিবে আমি বুঝিনা।

এই বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরীকুল ইসলাম বলেন, এখনো ছুটির বিষয়ে কোনো ডিক্লারেশন দেয় নাই সরকার। শিক্ষকরা বলেছে যেভাবেই পারে পরীক্ষা নিবে। কেউ আমাকেই পরীক্ষা নিতে পারবেনা এমন কিছু বলে নাই। তারপরও আমি আমাদের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *