‘পাহাড়খেকো’ কাউন্সিলর জসিম সাময়িক বরখাস্ত
‘পাহাড়খেকো’ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়; তিনি উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে ঢিল ছোড়া ও হুমকি দেওয়ার মামলায় অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) ওয়ার্ড কাউন্সিলর জসিমকে ১ নম্বর আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. আব্দুর রাফিউল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমের নামে চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানায় করা একটি মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছেন। এ জন্য স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী জসিমকে স্বীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বেলার প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসানের নেতৃত্বে বেলার একটি প্রতিনিধিদল গত বছরের ২৬ জানুয়ারি আকবর শাহ থানা এলাকায় পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শনে গেলে কাউন্সিলর জহুরুল ও তার সহযোগীদের মারমুখী আচরণের শিকার হন।
এ ঘটনায় রিজওয়ানা হাসান আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আকবর শাহ থানা পুলিশ গত বছরের ১২ জুন ছয়জনকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র দেয়। এতে অভিযোগপত্রে কাউন্সিলর জহুরুলকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন জহুরুলের সহযোগী বিল্লাল হোসেন, আবু নোমান, সাইফুদ্দিন ভূঁইয়া, আনিছ চৌধুরী ও মো. শাকিল। তাঁদের মধ্যে নোমান ছাড়া বাকিরা জামিনে আছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন আকবর শাহ থানার এসআই জাহেদ উল্লাহ জামান।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পাহাড় কাটা এলাকা পরিদর্শনে গেলে কাউন্সিলর জহুরুল আলমের নেতৃত্বে আসামিরা বেলার প্রধান নির্বাহীসহ প্রতিনিধিদলকে বাধা দেয়, গাড়ি আটকে রাখে ও বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। আটকে রাখা সেই গাড়ি পুলিশ গিয়ে ছাড়িয়ে নেয়।
২০১৫ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে জসিমের বিরুদ্ধে আকবরশাহ এলাকায় শত শত একর পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি, মাদক কারবার, অটোরিকশা ও বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁদা আদায়, কৈবল্যধাম হাউজিং এস্টেটের দেড়শতাধিক দোকান দখল এবং বিশ্বব্যাংক কলোনি এলাকায় কবরস্থানের জায়গা দখলের অভিযোগ আছে।