চট্টগ্রামসাতকানিয়া

পাহাড় কেটে সাবাড় করছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, নীরব বনবিভাগ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পাহাড় কেটে সাবাড় করছে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। পাশাপাশি পাহাড়ে থাকা মূল্যবান প্রজাতির গাছও সাবাড় করছে চক্রটি। পুলিশি সহায়তা না পাওয়ার অজুহাতে হাত গুটিয়ে আছেন বনবিভাগের কর্মকর্তারা। দিনের পর দিন স্কেভেটরের সাহায্যে পাহাড় কেটে সাবাড় করলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেননি তারা।

উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের বড়দুয়ারা মইন্নার টেক এলাকায় বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের গা ঘেঁষে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার এ যজ্ঞ চলছে।

জানা গেছে, পাহাড় কাটার অবৈধ সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাহেদ ও নুরু। তাদের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ হিসাবে কাজ করছেন মোক্তার ও আলমগীর নামে আরও দুজন। তাদের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। প্রতিরাতে স্কেভেটরের সাহায্যে মাটি কেটে ডাম্পার ট্রাকের মাধ্যমে স্থানীয় ভিটে-পুকুর ভরানোর কাজে সরবরাহ করছেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে তারা পাহাড় কাটছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সরকারি অফিস আদালত বন্ধ থাকায় তাদের ধরাপড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই তারা এ সময়কে নিরাপদ ধরে নিয়ে পাহাড় কাটার কর্মযজ্ঞ এগিয়ে নিচ্ছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, বনবিভাগ নামেমাত্র অভিযান চালায়। তাদের কিছুই করেনা। ‘গা বাঁচাতে’ মামলা করে দায় সারে কর্মকর্তারা। তাদের ধরতে বললে দেখিয়ে দিলে তারা নানান অজুহাত দেখান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, পাহাড়খেকোদের সঙ্গে মিলেমিশে বিট অফিস পরিচালনা করেন কর্মকর্তারা।

অভিযুক্ত মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, আমিতো মাটির ব্যবসা করি না। তবে মইন্যার টেক এলাকায় যে পাহাড় কাটা হচ্ছে সেই পাহাড়ের পাশে আমার মৎস্য খামার এবং দোকান রয়েছে। খামারে এবং দোকানে আসা যাওয়ার পথে লোকজন হয়তো আমাকে দেখেছে। এজন্য পাহাড় কাটার সাথে আমি জড়িত আছি ভাবছে। প্রকৃতপক্ষে আমি পাহাড় কাটার সাথে জড়িত নই। কারা কাটছে সেটাও আমি জানি না।

এ ব্যপারে বড়দুয়ারা বিট কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাহাড় কাটার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘বিটে জনবল স্বল্পতার কারণে শক্তিশালী এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। তাছাড়া তারা সবাই দলীয় লোকজন। পাহাড় কাটার সময় সিন্ডিকেটের লোকজন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত থাকে। তিনি আরো বলেন, ‘সাতকানিয়া পুলিশ প্রশাসন ওই এলাকায় অভিযানে সহযোগিতা করছে না। এটা আমার বিটের আওতাধীন এলাকা হলেও বান্দরবান জেলার ভেতরে। যেহেতু সাতকানিয়া বর্ডারের বাইরে বান্দরবানের প্রশাসনিক এলাকা সেহেতু সাতকানিয়া থানা পুলিশ ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করতে নারাজ। বান্দরবান পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *