পেঁয়াজের দামের নিয়ন্ত্রণ খাতুনগঞ্জে নয়, সীমান্তে
পেঁয়াজের দাম ‘ওঠানামায়’ খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, দেশের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের এই বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করেন সীমান্তে থাকা ব্যবসায়ীরা।
সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় এসব অভিযোগ তুলেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। তবে কোনো আমদানিকারক কিংবা তাদের কোনো প্রতিনিধি না থাকায় এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমদানিকারকদের বক্তব্য সভায় উঠে আসেনি।
সভায় খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে প্রায় ৫০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার সুযোগ সুবিধা বেশি থাকার কারণে সিংহ ভাগ আমাদানি ওই দেশ থেকেই হয়। ফলে পেঁয়াজ ব্যবসা বর্ডার কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। আমাদানি ও রপ্তানি একই দল করছে। ফলে বাজারের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতে।’
খাতুনগঞ্জের ব্যবসা কমিশনভিত্তিক উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা আড়তদার, আমাদের ব্যবসা কমিশনের ভিত্তিতে। আমাদানিকারকদের পণ্য বিক্রি করে বস্তা প্রতি কমিশনের উপর ভিত্তি করে আড়ত ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। তাই আমাদেরকে আমাদানিকারকদের এক ছাদের নিচে নিয়ে আসা হোক। আলোচনা সামনাসামনি হোক। সরকার চাইলেই তাদের এ সিন্ডিকেট ভাঙতে পারে।’
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক অসাধু আমদানিকারকদের তথ্য সংগ্রহ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলীতে যেসব আড়ত রয়েছে তাদের পণ্য মজুদের তথ্য জেলা প্রশাসনকে দিতে হবে। পণ্য মজুদ অনুপাতে ক্রয়ের রশিদও সংরক্ষণ করতে হবে। ‘ঘোষণার’ বাইরে কোনো পণ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক নিলাম ডেকে তা নায্যমূল্যে বিক্রি করা হবে।এ জন্য গণবিজ্ঞপ্তিও জারি করা হবে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দুঘণ্টা ধরে চলা এ বৈঠকে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
তিনি বলেন, এখন থেকে চট্টগ্রামের চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলীতে যেসব গোডাউন রয়েছে সব গোডাউনের তথ্য নেওয়া হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করার জন্য আমরা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবো। তালিকা ছাড়া কোনো গোডাউনে মালামাল পেলে সেগুলো সঙ্গে সঙ্গে জব্দ করা হবে। সবকিছু কাগজে কলমে থাকবে হবে। কাগজপত্রহীন কোনও কিছুই আমরা ছাড় দিবো না।
তিনি আরও বলেন, গোডাউনে পণ্যের অনুপাতে রশিদ থাকতে হবে। রশিদ ছাড়া কোনো মালামাল পাওয়া গেলে সেগুলো আমরা নিলামে ন্যায্যমূল্যে জনসাধারণের মাঝে বিক্রি করে দিবো।
ক্রেতাদেরও চাহিদার অতিরিক্ত পণ্য না কেনার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভোক্তাদের কাছে এই সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।