আন্তর্জাতিকজাতীয়

প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের একমাত্র সমাধান : বাংলাদেশ

‘নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রায় সাত বছর ধরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান’- জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৬ তম অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর অনুষ্ঠিত একটি সংলাপে এ কথা বলেন জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধি সঞ্চিতা হক।

তিনি জানান, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে তিনি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের আত্মীকরণের জন্য তাদের জীবিকার ব্যবস্থা উন্নয়নকল্পে বিনিয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধি রাখাইনের বুথিডং-এ রোহিঙ্গা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা এবং তাদের জোরপূর্বক বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগের সাম্প্রতিক খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি মিয়ানমারে যুদ্ধরত সকল পক্ষকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেয়া এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি বাংলাদেশের জনগণ ও স্থাপনা লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি চালানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন মিয়ানমারের যেকোনো সংঘাত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তবে এটি যেন বাংলাদেশের জনগণ ও সম্পদকে প্রভাবিত না করে।

তিনি বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তার আহ্বান জানান। এ ছাড়া তিনি মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে ন্যায়বিচার অর্জন এবং রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যুকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুরোধ করেন।

সংলাপের শুরুতে মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক কাউন্সিলে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর একটি প্রতিবেদন পেশ করেন। হাইকমিশনার সাম্প্রতিক সহিংসতা বৃদ্ধি, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগ এবং রাখাইনে ঘৃণ্য যুদ্ধ-কৌশল নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ২০১৬ ও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংস অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

গত ১৮ জুন জেনেভায় শুরু হওয়া জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৬তম অধিবেশনটি ১২ জুলাই পর্যন্ত চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *