প্রধানমন্ত্রী যে কারণে ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ দিয়েছেন
রোজা শুরুর আগেই গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইফতার পার্টি না করার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশনার পর প্রশ্ন ওঠে- কেনো এরকম একটা নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। রোজা শুরুর দিন থেকে তা স্পষ্ট হতে শুরু করে। আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগি সংগঠনগুলো ইফতার সামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালন করেন। এরই মধ্যে আয়োজনটি ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।
দ্বিতীয় রমজানের দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেখানে আবারও শেখ হাসিনা ‘ইফতার পার্টি না করার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছেন’ বলে বৈঠক শেষে জানান মন্ত্রীপরিষদ সচিব মাহবুব হোসন। একইসঙ্গে ওইদিন শেখ হাসিনা বলেন, যারা ইফতারে আগ্রহী ও সাধ্য আছে তারা যেন ইফতার পার্টির টাকা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায়।
সেই নির্দেশনা মাথায় রেখে তার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনগুলো কাজ শুরু করে। কিন্তু ইফতার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, কেবল এবারই নয়, গতবারও কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে এবং প্রধানমন্ত্রীর গণভবনে কোন ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়নি। গতবার অপচয় রোধে ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে খরচ কমাতে ইফতার পার্টি না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সাধারণত গণভবনসহ বিভিন্ন জায়গায় খুবই আড়ম্বরপূর্ণ ইফতার পার্টি হয়। এই সামাজিক অনুষ্ঠানে যারা যায় তাদের সবারই কিন্তু ইফতার করার সামর্থ্য থাকে। তাই সরকার ও দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যারা গরীব তাদের কাছে ইফতার সামগ্রী বিতরণের জন্য।
রমজান মাসে ইফতার পার্টি না করে সেই অর্থ দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে লক্ষ্যে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। সেই নির্দেশনার অংশ হিসেবেই ছাত্রলীগ দেশজুড়ে ইফতার সামগ্রী বিতরণের এই কার্যক্রম শুরু করেছে।
ছাত্রলীগের উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমির হামজা বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই পবিত্র রমজান মাসে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে নির্দেশনা দিয়েছেন তারই অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ। আমরা মাসজুড়ে এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখব।
ইফতার সামগ্রী সহায়তা পাওয়া রমিজান বানু বলেন, রোজায় খরচ একটু বেশি হয়। আমরা সাধারণত ভাত দিয়ে ইফতারি করে থাকি, ঘরে শরবতের ব্যবস্থা করতেও হিমশিম খাই। এই সামগ্রী পাওয়ার কারণে এবার অন্যভাবে ইফতার করতে পারবো। কোনরকম হয়রানি ছাড়া এই যে সামগ্রী বিতরণ সেটার ব্যবস্থা যিনি করেছেন আল্লাহ তার ভালো করুক।
এদিকে রমজান মাসে ইফতার পার্টি না করে সেই অর্থ দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ মেনে অস্বচ্ছল মানুষের মাঝে শেখ হাসিনার পক্ষে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, পবিত্র রমজান মাসে আওয়ামী লীগ অস্বচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। দলের সবাইকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। কেবল ঢাকায় নয়, স্থানীয়ভাবেও নেতাকর্মীরা এই কর্মযজ্ঞে যুক্ত হয়েছেন। রোজই ইফতারির আগে বিভিন্ন স্পটে দলীয় উদ্যোগে ইফতার সামগ্রী দেওয়া মাসব্যাপী অব্যাহত থাকবে।