চট্টগ্রামপার্বত্য চট্টগ্রাম

প্রেমিকের হাত ধরেই কেএনএফে আকিম বম

বান্দরবান জেলা সদরের লাইমীপাড়া থেকে অভিযান চালিয়ে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি উপজেলা অঞ্চলের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বম (১৮) কে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১৫ সদস্যরা। একই অভিযানে গ্রেপ্তার হন লালসিয়ামলং বম (৬০) নামের কেএনএফের অপর এক সক্রিয় সদস্য।

শুক্রবার (১৭ মে) এক ক্ষুদে বার্তায় বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদুল মুবিন খান।

গ্রেপ্তারের পর ওই দিন বিকেলে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং করেন র‍্যাব-১৫ অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

তিনি বলেন, মূলত ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার পর কেএনএফের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। অভিযানে সংগঠনটির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় শতাধিক সদস্য গ্রেপ্তার হয়। কেএনএফের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায়ও নারী সদস্যরা সম্পৃক্ত ছিল। সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের নারী শাখার সমন্বয়কের কাজটি পরিচালনা করতেন মূলত আকিম বম। শুধুমাত্র এই কাজের জন্যই তিনি রোয়াংছড়ি ও বান্দরবান জেলা সদরে বাসা ভাড়া করে থাকতেন।

র‌্যাবের এই কমান্ডার বলেন, গ্রেপ্তার আকিম বম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‍্যাবকে জানিয়েছেন, তিনি ক্যাওক্রাডং পাহাড়ের কাল্লা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। সেই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তার বাবা। স্কুলে লেখাপড়া করার সময় মাইকেল বম নামে একটি ছেলের সাথে পরিচিত হন। পরে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। মাইকেলের মাধ্যমে তিনি কেএনএফে ট্রেনিংয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের দিকে রোয়াংছড়ির এক গহীন পাহাড়ে ভান থার ময় বম নামে কেএনএফের এক নারী কমান্ডারের কাছে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি।

এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কেএনএফ নারী শাখার অন্যতম প্রধান এই সমন্বয়ক তাদের বলেছেন, তাদের প্রশিক্ষণ ব্যাচে ২০ জন নারী সদস্য ছিল। গহীন পাহাড়ে ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে তাদের কষ্ট সহ্য করার সব প্রশিক্ষণই দেওয়া হতো। সদর উপজেলা ও রোয়াংছড়ি উপজেলাসহ আশপাশের বম জনগোষ্ঠীর এলাকাগুলো থেকে বম নারীদের কেএনএফের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করা হত। এখন পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ জন নতুন নারী সদস্য কেএনএফে অংশ নিয়েছে বলে তিনি আমাদের জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র‍্যাব-১৫ অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি ও আনসার সদস্যের অস্ত্র লুটের ঘটনার পর অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। এ পর্যন্ত বান্দরবান জেলায় সন্ত্রাসবিরোধী বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির বান্দরবান সদর শাখার সমন্বয়ক চেওসিম বম, ফারুক পাড়ার কেএনএফের সভাপতি সানজু খুম বমসহ তিনজন কেএনএফ সন্ত্রাসী র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তা‌র হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *