বিনোদন

প্রেমে পড়তে কে সাহায্য করে, মন নাকি মস্তিষ্ক!

মানুষ কেন প্রেমে পড়ে এই প্রশ্ন উঁকি দিতে পারে অনেকের মনে। নারী ও পুরুষের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ থেকে আসে আসক্তি। আসক্তি থেকে আসে পূর্বরাগ। আর পূর্বরাগ হলো প্রেমের প্রস্তুতি। প্রেম হলো কামনা। একে অপরের প্রতি জেগে ওঠা দুর্নিবার বাসনাকে ভালোবাসা বলে। প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু কথা হলো মানুষ প্রেমে কেন পড়ে? প্রেমে পড়ার প্রধান নিয়ামকই বা কী? এমন অনেক প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকি দেয়।

কিন্তু কারও প্রেমে পড়ার পর এমনটা কেন হয় তা ভেবে দেখার চেষ্টা করেছেন কখনও? মানুষ তার রূপ, চেহারা এবং ব্যক্তিত্ব দেখে একজন ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে। কিন্তু এর পেছনের কারণ খুব কম সংখ্যক মানুষই জানে।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা বলছে, প্রেম সবই মস্তিষ্কের খেলা। আসুন আমরা কেন প্রেমে পড়ি তা জানার চেষ্টা করি।

অন্যদিকে সাইকোলজিস্টরা বলছেন, ভালোবাসা এমন একটি অনুভূতি যেখানে একজন ব্যক্তি হৃদয় থেকে চিন্তা করে এবং অনুভব করে। এতে একজন ব্যক্তির মনে অনেক আবেগ এবং বিভিন্ন চিন্তার বিকাশ ঘটে, যা সুখ, স্বস্তি ও শান্তি দেয়। এটি আকর্ষণের প্রভাবে ঘটতে পারে বা আকর্ষণ ছাড়াই বিকাশ লাভ করতে পারে।

ভারতের নারায়ণা হাসপাতালের ডা. রাহুল রাই কাক্কার বলেন, আমরা যদি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, আমরা যখন বড় হই তখন আমাদের শরীরে টেরেস্টেরন, প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন তৈরি হয়। এর ফলে আমাদের শরীরে একটি প্রক্রিয়া ঘটে যার মধ্যে আমরা ভালোবাসা এবং উত্তেজনা অনুভব করি।

সুপরিচিত বিজ্ঞানী ড. হেলেন ফিশার প্রেমকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন- লালসা, আকর্ষণ এবং সংযুক্তি। প্রেমের প্রথম অনুভূতি মস্তিষ্কে ৩টি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ঘটে। নোরাড্রেনালাইন, ডোপামিন এবং ফেনাইলথিলামাইন। নোরাড্রেনালিন রাসায়নিক অ্যাড্রেনালিনকে উদ্দীপ্ত করে, যার ফলে হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হয় এবং হাত ঘামতে থাকে। ডোপামিন আপনাকে ভালো বোধ করায়। যখন আমরা আমাদের ক্রাশের কাছাকাছি থাকি, তখন ফেনাইলথাইলামাইন নিঃসৃত হয়, যা আমাদের পেটে প্রেমের প্রজাপতি উড়ছে, অনুভব করায়।

আসলে ভালোবাসা একটি সংযুক্তির অনুভূতি, যা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। এতে একজন মানুষ সবকিছু ভুলে এই সুখ উপভোগ করেন এবং এর ফলে তার শরীরে ডোপামিন, অক্সিটোসিন, সেরোটোনিন এবং এন্ডোরফিনের মতো অনেক ধরনের হরমোন বৃদ্ধি পায়, যা তাকে আনন্দ দেয়। একে আমরা বাস্তবে প্রেম বলে থাকি। উল্লেখ্য গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রেম আসলে মস্তিষ্কের রাসায়নিক প্রক্রিয়াই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *