ফরিদপুরে প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের ইট তুলে নেওয়ার অভিযোগ
ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রির চর ইউনিয়নের নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামের নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কের ইট তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
চরের কতিপয় ব্যক্তির দাবি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান মিন্টু তার স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে ইটগুলো তুলে নিয়েছেন।
সড়কটি নদী ভাঙনের কবলে পড়ায় উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে ইট তুলে নিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, দুর্গম পদ্মার চরের মানুষের জীবন যাত্রায় স্বস্তি ফেরাতে কয়েক বছর আগে নাজির বিশ্বাসের ডাঙ্গী চরের গোরস্থান মসজিদ থেকে পালডাঙ্গী পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এইচ বিবি (ইটের) সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ক্রমশ পদ্মা আগ্রাসী হয়ে ওঠায় গত ২-৩ বছর ধরে ভাঙনের কবলে পড়ে সড়কটি। বর্তমানে ওই সড়কটির আধা কিলোমিটার অবশিষ্ট রয়েছে, যা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
চরের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান, ইউনুস মাঝি ও আসলাম মোল্লাসহ কয়েকজন জানান, নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়া সড়কটির নদীগর্ভে চলে যাওয়া আড়াই কিলোমিটার অংশের ইট স্থানীয় চেয়ারম্যানের হয়ে তুলে নিয়ে গেছেন হারু মাতুব্বর। ওই ইট আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তারা।
এদিকে হারু মাতুব্বর জানান, ডিক্রির চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান মিন্টুর অনুরোধে ইটগুলো যাতে নদীতে বিলীন না হয়ে যায়, তাই সেগুলো তুলে ট্রলারে করে নদীর অপর প্রান্তের ফরিদপুর নদী বন্দর এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডিক্রির চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির জানান, যেহেতু সড়কটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তাই ইটগুলো যাতে চরের উন্নয়নে পুনরায় ব্যবহার করা যায় অথবা নষ্ট না হয়ে যায়, সে লক্ষ্যে কিছু ইট তুলে এনে নদী বন্দর এলাকাতেই জমা করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে একটি ইটও খোয়া বা নষ্ট হয়নি। তিনি দাবি করেন, বেশ কিছু অংশের ইট নদী গর্ভে চলেও গেছে, অবশিষ্ট ইটগুলো তুলে না আনলে সড়কটির সঙ্গে ওই ইটগুলোও নদীগর্ভে চলে যেত।
তিনি আরও দাবি করেন, একটি পক্ষ অহেতুক হয়রানি করতেই ইট নিয়ে গেছি বলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এলাকার মানুষের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশীষ বাগচী জানান, সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান নদী গর্ভে চলে যাওয়া সড়কটির কিছু ইট নিজ হেফাজতে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন। ওই সময়ে ইটগুলো সরিয়ে না আনা হলে সেগুলো নদীতে বিলীন হয়ে যেত।
তিনি জানান, এই ইট যদি ওই চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত কোনো কাজে ব্যবহার করেন তবে অবশ্যই তিনি দায়ী হবেন।
তিনি আরও জানান, ইটগুলো শিগগিরই আইনগত প্রক্রিয়ায় অকশনের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়া হবে।