ফেনীতে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে ২০ হাজার মানুষ
ফেনীর কয়েকটি উপজেলার বাসিন্দারা এখনো পানিবন্দি রয়েছেন। দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও ফেনী সদর উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাটের পাশাপাশি বাড়িঘরে পানি রয়েছে। এখনো প্রায় ২০ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এখনো প্রায় ২০ হাজার লোক আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছেন দাগনভূঞা উপজেলায়।
দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর, ওমরাবাদ, বৈঠারপাড়, চন্দ্রদ্বীপ, করমুল্লাপুর, উত্তর করিমপুর, রাজাপুরের সাপুয়া, জয়নারায়নপুরসহ বিভিন্ন এলাকা এখনো পানির নিচে রয়েছে।
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা বলেন, রোববার ১০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। পানি ধীরে ধীরে কমছে। আজ হয়তো আরও একটু কমবে। তবে এখনো বিভিন্ন এলাকায় পানি রয়েছে।
দাগনভূঞার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ওমরাবাদ এলাকায় রোববার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, ফেনী-সোনাইমুড়ি সড়কটি হাঁটুপানিতে নিমজ্জিত। ওই পানি মাড়িয়ে ৫শ গজ গেলেই পূর্ব চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির নিচতলা থেকে এখন পানি নেমেছে। স্কুলের নিচতলা ও দোতলায় এখনো লোক অবস্থান করছে।
খাদিজা বেগম নামে এক নারী জানান, তার বাড়ি বৈঠারপাড়ে। সাত দিন ধরে তিনি এখানে রয়েছেন। ঘরে পানি এখন কিছুটা কমেছে। আর একদিন পর বাড়িতে ফিরবেন বলে জানান তিনি।
করমুল্লাপুর এলাকার ঘরে ঘরে পানি রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ২৫ আগস্ট থেকে ঘরে পানি ঢোকে। এরপর আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই। এখন পানি কমেছে। তবে কিছু পানি এখনো রয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন এখনো পানিবন্দি। এর মধ্যে লেমুয়া ও ধলিয়া অন্যতম। এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে তিন হাজারের মতো লোকজন রয়েছেন। বাসাবাড়িতেও পানি রয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান বলেন, এখনো কিছু এলাকায় পানি রয়েছে। ঘরবাড়িতেও পানি আছে। পানি নামার পর ঘর পরিষ্কার করতেও সময় লাগে। তাই এখনো প্রায় তিন হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
ফেনী সদরের তুলাবাড়িয়া এলাকায় দেখা যায়, লোকজন ঘর পরিষ্কারে ব্যস্ত। পানি কমার পর মেঝেতে কাদা জমতে দেখা গেছে। এখনো অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
সাধন পাল নামের একজন বাসিন্দা বলেন, তাদের পাড়ায় কমপক্ষে ১০টি ঘর একেবারে নষ্ট হয়েছে। বাকিগুলোতে কাদামাটি জমেছে।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফাহমিদা হক বলেন, পানি ধীর গতিতে নামায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে সময় লাগছে। এখনো প্রায় ২০ হাজার লোক আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচুর ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।