জাতীয়

বঙ্গবন্ধু জেলে থেকেও আন্দোলনকারীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেন

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের বিস্ফোরণ পর্বে বঙ্গবন্ধু জেলে ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে রাজনৈতিক ময়দানে অনুপস্থিত থাকলেও জেলে বসেও নিয়মিত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করতেন (সূত্র : একুশে ফেব্রুয়ারি জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক ড. মোহাম্মদ হান্নান, পৃ. ৫৩)।

এ প্রসঙ্গে ভাষাসৈনিক গাজীউল হক তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন ‘১৯৪৯ সালের অক্টোবর মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন জেলে আটক ছিলেন। ফলে স্বাভাবিক কারণেই ’৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে জেলে থেকেই তিনি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতেন।’ (গাজীউল হক, আমার দেখা আমার লেখা, পৃষ্ঠা : ৪০)।

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যারা গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে ছিলেন, যেমন আব্দুস সামাদ আজাদ, জিল্লুর রহমান, কামরুজ্জামান, আব্দুল মমিন তারা সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, বঙ্গবন্ধু জেলখানা থেকে এবং পরে হাসপাতালে থাকাকালীন আন্দোলন সম্পর্কে চিরকুটের মাধ্যমে নির্দেশ পাঠাতেন। ভাষাসৈনিক, প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী ‘একুশকে নিয়ে কিছু স্মৃতি, কিছু কথা’ প্রবন্ধে বলেছেন : শেখ মুজিব ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ ফরিদপুর জেলে যাওয়ার আগে ও পরে ছাত্রলীগের একাধিক নেতার কাছে চিরকুট পাঠিয়েছেন। (তথ্যসূত্র : ভালোবাসি মাতৃভাষা, পৃষ্ঠা : ৬২)। কারাগারে শেখ মুজিবুর রহমান ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অনশন শুরু করেন। সরকারের নির্দেশে ১৮ ফেব্রুয়ারি তাকে ফরিদুপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙতে গেলে পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার শহীদ হন। ঢাকার পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ২৩ ফেব্রুয়ারি অনশন ভঙ্গ করার কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে বার্তা পাঠান মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *